ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয় - তেতুলের ২০টি কার্যকরী উপকারিতা ও অপকারিতা


ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয় এবং তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা এসব যদি জানতে চান তাহলে ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন। এখানে আমি আপনাকে তেতুল খাওয়ার ২০টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানাবো যা জেনে আপনি তেঁতুল খাওয়ার প্রতি আগ্রহ আরো বৃদ্ধি করবেন।

তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা - ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়

আজকে আমরা আর্টিকেলে তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা, ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়, তেতুলের পুষ্টিগুণ, তেতুলের ক্ষতিকর দিক, ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম এবং তেঁতুল সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাই চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।

পেইজ সূচিপত্রঃ ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয় - তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা 

তেতুলের পুষ্টিগুণ - তেতুলে কোন ভিটামিন থাকে

তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার পূর্বে আমাদেরকে জানতে হবে তেতুলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে এবং তেতুলে কোন ভিটামিন থাকে। আমরা অনেকেই তেতুলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানি না। তেতুলে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। তাহলে চলুন জেনে আসি তেতুলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে।

প্রতি ১০০ গ্রাম তেতুলে রয়েছেঃ

পুষ্টি উপাদান পরিমাণ
ক্যালোরি ২৪৯ কিলো ক্যালরি
চর্বি ০.৬ গ্রাম
চিনি ৩৪গ্রাম
প্রোটিন ২.৮ গ্রাম
পটাশিয়াম ৬২৮ মিলিগ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ৬৩ গ্রাম
সোডিয়াম ২৮ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ১১৩ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাবিন ০.১৫ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ১.৯ মিলিগ্রাম
থায়ামিন ০.৩৪ মিলিগ্রাম
লোহা ২.৮ মিলিগ্রাম
ডায়েটারি ফাইবার ৫.১ গ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৯২ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ৭৪ মিলিগ্রাম

ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়

ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয় এ সম্পর্কে অনেকে প্রশ্ন করে থাকে। অনেকে জানতে চান ছেলেরা যদি তেঁতুল খায় তাহলে কোন ক্ষতি হবে কি। এ সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায় ছেলেরা তেতুল খেলে কোন ক্ষতি হবে না উল্টো অনেক উপকার রয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত তেতুলের যত পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলাম এবং যত উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম সেগুলো ছেলে এবং মেয়ের জন্যই প্রযোজ্য। 

আপনি যদি তেঁতুল খান তাহলে এটি আপনার অনেক উপকার করবে। আপনি যদি একজন ছেলে হয়ে তেতুল খান তাহলে এটি আপনার শুক্রানুর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে। এক্ষেত্রে বলা যায় প্রত্যেক পুরুষের উচিত প্রতিদিন একটি করে হলেও তেঁতুল খাওয়া যাতে শুক্রাণুর গুণ মান উন্নত হয়। তাছাড়া আপনি চাইলে তেতুলের খোসা গুড়া করেও খেতে পারেন। 

সেটিও আপনার অনেক উপকার করবে। এমনকি আপনার যদি লিভার ফ্যাটি হতে শুরু করে চর্বি বৃদ্ধি হওয়া শুরু করে তাহলে তেঁতুল এ ক্ষেত্রে অনেক উপকারী হিসাবে গণ্য হয়। এর পাশাপাশি আপনি যদি তেঁতুল খান তাহলে লিবিডো হরমোন বাড়াতেও এটি অনেক ভূমিকা পালন করে। তাই একজন ছেলে হিসেবে আপনি তেঁতুল খেলে প্রচুর উপকার আসবে। 

যদিও তেতুল মেয়েদের অনেক উপকারী এবং পছন্দের অনেকে মনে করে থাকেন তেঁতুল খেলে হয়তো বা রক্ত জল হয়ে যাবে এ ধারণাটি ঠিক নয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এটি ছেলেদের অনেক উপকার সাধিত করে। তাই আপনি নির্দ্বিধায় তেঁতুল খেতে পারবেন।

তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা তেতুলের উপকারিতা

তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য জরুরী। কারণ আমরা অনেকেই তেঁতুল খেতে পছন্দ করে থাকি আবার অনেকে কাঁচা তেতুল খেতে পছন্দ করে থাকে তাই আমাদের জানতে হবে কাঁচা তেতুলের উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা জানলাম তেতুলে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে এখন আমরা জানবো এ সকল পুষ্টি উপাদান থাকার কারণে তেতুল আমাদের শরীরে কি কি উপকার করে থাকে। এখানে আমি ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে আপনাকে জানাবো। চলুন জেনে আসি সেই উপকারিতা গুলো।

এক নজরে তেতুলের ২০টি উপকারিতাঃ

  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
  • লিভার ঠিক রাখতে
  • ক্ষত নিরাময়ে
  • ক্যান্সার রোধে
  • হার্টের সুস্বাস্থ্যে
  • পেপটিক আলসার রোধে
  • ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে
  • মস্তিষ্কের উপকারে
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
  • চুলের যত্নে
  • চোখের যত্নে
  • ত্বকের যত্নে
  • হাড় ও দাঁতের সুস্বাস্থ্যে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
  • হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
  • সর্দি কাশি ভালো করতে
  • ওজন কমাতে
  • ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে
  • মর্নিং সিকনেস ভালো করতে

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ প্রত্যেক শরীরের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঢাল হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়া প্রয়োজন। এই তেতুলে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া উপাদান আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলে।

লিভার ঠিক রাখতেঃ আপনার লিভার জাতীয় বিভিন্ন সমস্যায় তেঁতুল ব্যবহার হয়ে থাকে। বিভিন্ন গবেষণা দেখা গিয়েছে যারা অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে লিভার নষ্ট করে ফেলেছেন প্রায় তারা নিয়মিত তেতুলের পাতা ব্যবহার করার ফলে অনেকাংশেই লিভার সুস্থ হয়ে উঠেছে।

ক্ষত নিরাময়েঃ আপনার যদি বিভিন্ন জায়গায় কেটে গিয়ে থাকে তাহলে তেঁতুল গাছের পাতা এবং গাছের ছাল ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এগুলো অ্যান্টিসেপটিক এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল জাতিয় এটি ক্ষত সারিয়ে তুলতে আপনাকে সাহায্য করবে।

আরো পড়ুনঃ উলট কম্বল গাছের ৬টি অজানা উপকারিতা - ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম

ক্যান্সার রোধেঃ তেতুলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা কিডনির অকেজ হওয়া থেকে আপনাকে মুক্ত রাখে। এমনকি দেখা গিয়েছে ক্যান্সার রোধ করতেও এটি সাহায্য করে থাকে।

হার্টের সুস্বাস্থ্যেঃ হার্ট ভালো রাখতে তেঁতুল খুবই কার্যকরী। তেতুলে থাকা উচ্চ পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। আবার রক্তে ট্রাই গ্লিসারাইড জমতে দেয় না। এমনকি আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায়।

পেপটিক আলসার রোধেঃ পেপটিক আলসার জাতীয় রোগে যদি আক্রান্ত থাকেন তাহলে তেতুলের বীজের গুড়া এক্ষেত্রে উপকার করতে পারে। দেখা গিয়েছে, তেতুলের বীজের গুড়া নিয়মিত খেলে পেপটিক আলসার দ্রুত সেরে যাচ্ছে। বেশিরভাগ সময় এই রোগ পেটে হয়। আর তেতুলে উপস্থিত পলিফেনলিক কম্পাউন্ড আলসার ভালো করতে সাহায্য করে।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধেঃ ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে তেতুল অনেক আগেকার থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন অঞ্চলে প্রধান ঔষধি উদ্ভিদ হিসেবে তেতুলের গাছ ধরা হয়। আফ্রিকান উপজাতিরা ম্যালেরিয়া চিকিৎসার জন্য এটি ব্যবহার করে আসছে। কেননা তেতুল এন্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন।

মস্তিষ্কের উপকারেঃ দেখা গেছে মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী বলে তেতুল ধরা হয়। তেতুলের মধ্যে থাকা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড আপনার খাবার থেকে আয়রন সংগ্রহ করে বিভিন্ন কোষে পরিবহন করে নিয়ে যায়। এই আয়রনের পরিমাণ যদি সঠিকভাবে মস্তিষ্কে পৌঁছায় তাহলে চিন্তাভাবনার গতি আগে থেকে অনেক বেশি বৃদ্ধি হয়।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ তেতুলে থাকা বিভিন্ন এন্টি ইনফ্লামেটরের বৈশিষ্ট্য শরীরের বিভিন্ন ফ্রি রেডিকেল গুলো ধ্বংস করে। তেতুলকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বলা হয় কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে টারটারিক এসিড রয়েছে যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। যার ফলে আপনার তেঁতুল খেলে গলা ব্যথা বা জয়েন্টের ব্যথা দূর হয়।

চুলের যত্নেঃ আপনি যদি চুলের যত্ন নিতে চান তাহলে অবশ্যই তেঁতুলকে মাথায় রাখতে হবে। যদি চুলকে উজ্জ্বল করতে চান তাহলে তেঁতুলে থাকা ভিটামিন সি আপনাকে এটি করতে সাহায্য করবে। এমনকি ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করবে। মাথার ত্বকে তেতুলের রস লাগালে আপনার ত্বকের ফলিকলের বৃদ্ধি ঘটাবে এই তেতুল।

চোখের যত্নেঃ অনেক আগে কাল থেকেই চোখের বিভিন্ন চিকিৎসায় তেঁতুল ব্যবহার হয়ে থাকে। বর্তমানেও বিভিন্ন চোখের ড্রপ তৈরিতেও তেতুলের ব্যবহার দেখা যায় তাই বলা যায় এটি আপনার চোখের জন্য খুবই ভালো।

ত্বকের যত্নেঃ আপনি যদি ত্বকের উজ্জ্বল এবং দাগ মুক্ত করতে চান তাহলে তেঁতুল এর রস ব্যবহার করে দেখুন। এই তেতুলের মধ্যে রয়েছে সাইট্রিক এসিড, ম্যালিক এসিড, ল্যাকটিক এসিড এবং টার্টারিক অ্যাসিড এমনকি এর পাশাপাশি চিনি এবং পেকটিনো রয়েছে যা আপনার ত্বক হাইড্রেটেড রাখে। ত্বকের পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এদের প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি রয়েছে যা আপনার ত্বকে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা - কাঁচা তেতুলের উপকারিতা

হাড় ও দাঁতের সুস্বাস্থ্যেঃ হাড় ও দাঁতের সুস্বাস্থ্যে ক্যালসিয়াম খুবই জরুরী। আর এই ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি পরিমাণে থাকে। তেতুলে যা আপনার হাড় ও দাঁতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য জাতীয় সমস্যা যারা ভুগছেন তারা নিয়মিত তেঁতুল খেয়ে দেখতে পারেন। কেননা দেখা গিয়েছে নিয়মিত তেতুল খেলে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ আপনি যদি নিজের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে তেঁতুল খেতে পারেন। কেননা তেতুল একটি ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য এটি আপনার অন্ত্রের গতিবিধির সহজ করে যার ফলে হজম দ্রুত হয়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তেঁতুল খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তেতুলের বীজ ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তেতুল আপনার রক্তের চিনির মাত্রা ঠিক রাখে। কেননা তেতুলে এক ধরনের এনজাইম রয়েছে যার নাম আলফা এমাইলেস যা আপনার রক্তের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

সর্দি কাশি ভালো করতেঃ আপনার যদি সর্দি কাশি ভালো না হয় তাহলে তেঁতুল খেয়ে দেখতে পারেন। তেতুল আপনার অ্যালার্জি হতে বাধা দেয়। আবার তেতুলে ভিটামিন সি রয়েছে যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

আরো পড়ুনঃ সবুজ আঙ্গুর খাওয়ার ১০টি উপকারিতা-বেশি আঙ্গুর খেলে কি হয়সবুজ আঙ্গুর খাওয়ার ১০টি উপকারিতা-বেশি আঙ্গুর খেলে কি হয়

ওজন কমাতেঃ তেতুল ফাইবার সমৃদ্ধ এমন কি এটি সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রী জাতীয় খাদ্য। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আপনি যদি তেতুল প্রতিদিন নিয়মিত খান তাহলে এটি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। তাই যদি ওজন কমাতে চান তাহলে তেঁতুল আপনার ডায়েটে রাখতে পারেন।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণেঃ বিভিন্ন ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে তেঁতুল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তেতুলে থাকা পটাশিয়াম এবং আয়রন নামক উপাদান আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।

মর্নিং সিকনেস ভালো করতেঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ক্ষেত্রে মর্নিং সিকনেস একটি সাধারণ সমস্যা সবার ক্ষেত্রে দেখা দেয়। তেতুলের টক জাতীয় উপাদান গর্ভবতী মায়েদের মর্নিং থেকে অনেকটাই মুক্তি দেয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া নিরাপদ বলে প্রমাণিত।

আমরা এপর্যন্ত তেতুল খাওয়ার ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা তেতুলের অপকারিতা সম্পর্কে জানবো। আমরা নিচে তেঁতুলের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আলোচনা করেছি তাই পড়তে থাকুন জানতে পারবেন।


তেতুলের ক্ষতিকর দিক - তেঁতুল খেলে কি গ্যাস হয়

তেতুলের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। কেননা আমরা তেঁতুল খেলে আমাদের কতটুকু ক্ষতি হতে পারে ও কতটুকু পরিমাণে খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের জানতে হবে। আমরা এ পর্যন্ত তেঁতুলের পুষ্টিগুণ এবং তেতুলের অনেক উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা জানবো তেঁতুলের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। চলুন জেনে আসি সেই ক্ষতিকর দিকগুলো।

এলার্জি হওয়াঃ যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খেলে এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। যেমনঃ রেশ, চুলকানি, বমি হওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়ার মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া উচিত।

পিত্তপাথর হওয়াঃ আপনি যদি বেশি পরিমাণে ঘন ঘন প্রচুর তেঁতুল খান তাহলে আপনার পিত্ত পাথর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে জন্ডিস, তীব্র জ্বর, বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা এমনকি লিভারের সমস্যা ও দেখা দিতে পারে।

গ্যাস হওয়াঃ আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খান তাহলে তেঁতুলের অ্যাসিটিক উপাদানের কারণে গ্যাসের সমস্যায় ভুগতে পারেন। তাই যারা এসিডরিফ্লাক্সের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের তেতুল খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।

দাঁতের এনামেল নষ্ট হওয়াঃ তেতুলের যেহেতু উচ্চ মাত্রায় এসিটিক রয়েছে তাই নিয়মিত তেতুল খেলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়াঃ বেশি পরিমাণে তেঁতুল খাওয়ার ফলে আপনার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। তাই পুষ্টিবিদরা প্রতিদিন ১০ গ্রামের বেশি তেঁতুল খেতে নিষেধ করে থাকে। বিশেষ করে যেসব ডায়াবেটিস রোগীরা চিনির মাত্রা কমানোর জন্য ওষুধ খেয়ে থাকেন তারা তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

বিভিন্ন ঔষধের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া হওয়াঃ তেতুল রক্তপাতের আশঙ্কা সৃষ্টি করতে পারে। আপনার বিভিন্ন ঔষধ সেবনের পাশাপাশি যদি তেঁতুল খান তাহলে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে যারা এসপিরিন, রক্ত পাতলা করার ওষুধ, নেপোক্সিন ইত্যাদি জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন তারা তেঁতুল খেলে শরীরে শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে রক্তপাত বৃদ্ধি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওজন কমাতে তেতুঁল খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে তেতুল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চেয়ে থাকে। তেতুল খেলে কিভাবে আমার ওজন কমবে আর যদি কমে তাহলে কোন পদ্ধতিতে খেলে ওজন কমানো যাবে। নিচে আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো তাই সঙ্গেই থাকুন।

আপনি যদি তেতুল খেয়ে ওজন কমাতে চান তাহলে অনেক পদ্ধতি রয়েছে। নিচে আমি তেঁতুলের শরবত বানানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো যা খেলে আপনি ওজন কমাতে পারবেন বলে আশা করা যায়।

তেতুল শরবতঃ

যা লাগবে

  • তেতুলের কাথঃ ১ টেবিল চামচ
  • চিনিঃ আধা চা চামচ
  • বিট লবণঃ সামান্য
  • জিরা গুড়াঃ সামান্য
  • পুদিনার পাতাঃ ৮ থেকে ১০ টি
  • পানিঃ পরিমান মত
  • বরফঃ চাইলে দিতে পারেন

ওজন কমাতে তেতুঁল খাওয়ার নিয়ম

প্রক্রিয়া

  • প্রথমে পাকা তেতুলকে ভালো করে ধুয়ে নিন এবং পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন প্রায় ১০ মিনিট ধরে।
  • ১০ মিনিট পরে হাত দিয়ে ভালোভাবে তেতুল থেকে তেতুলের কাথ বের করে নিন।
  • পুদিনার পাতাকে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এর সঙ্গে বিট লবন ও চিনি মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
  • তারপর সেই ব্লেন্ডারের মধ্যে তেঁতুলের কাথ ও পরিমাণমতো পানি দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। তাহলেই দেখবেন তেতুলের শরবত তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখানে বরফ ঢেলে অতিথির সামনে পরিবেশ করুন।

শেষ কথাঃ ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয় - তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রাণপ্রিয় পাঠক মন্ডলী!! আশা করছি আপনি যে বিষয়ে জানতে এসেছিলেন তা জানতে পেরেছেন। আমরা পুরো আর্টিকেল জুড়ে তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা, ছেলেরা তেতুল খেলে কি হয়, তেতুলের ক্ষতিকর দিক, ওজন কমাতে তেতুঁল খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

এই আর্টিকেল পড়ার পর যদি আপনার কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা পুরো আর্টিকেল জুড়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। যদি এই আর্টিকেলে কোন ভুল ধরা পড়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে তা জানাবেন আমরা পরবর্তীতে সংশোধন করার চেষ্টা করবো। 

এই আর্টিকেল পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়েছেন বলে মনে করে থাকেন এবং অন্যদেরকেও উপকৃত করতে চান তাহলে আর্টিকেলটি বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করুন যাতে তারা তেতুল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে উপকৃত হতে পারে। এটাই আমাদের কাম্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url