পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা । পলিসিস্টিক ওভারি কেন হয়

 

পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কিত তথ্য এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি যদি এই সমস্ত তথ্য জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পুর্ণ ধৈর্য সহকারে পড়ুন। পলিসিস্টিক ওভারি বা PCOS হলো একটি সাধারণ হরমোনাল ব্যাধি যা প্রজনন ক্ষমতা সম্পন্ন মহিলাদের প্রায় ১০% প্রভাবিত করে। 

পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

এই আর্টিকেলে আমরা পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা, এর পরিচয়, পলিসিস্টিক ওভারি লক্ষণ এবং  কেন হয় পলিসিস্টিক ওভারি, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এর চিকিৎসা সম্পর্কিত তথ্য আলোচনা করব। আসুন দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।

পেইজ সূচিপত্রঃ পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা । পলিসিস্টিক ওভারি কেন হয়

পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানার জন্য প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে এই রোগটি আসলে কি? পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম যাকে আমরা PCOS বলে থাকি। যা মহিলাদের প্রজনন সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। এই সময় ডিম্বানোর স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং ডিম্বস্ফোটনে বাধা দিয়ে থাকে এই সিনড্রোমটি। তার কারণ মহিলাদের ডিম্বাশয় অনেকগুলি ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়। 

এর ফলে আপনার সাধারণত অতিরিক্ত শরীরের লোম, ব্রণ, ওজন বৃদ্ধি, অনিয়মিত মাসিক চক্র ইত্যাদি লক্ষণ দিয়ে শুরু হয়। পলিসিসটিক ওভারে সিনড্রোম থেকে বাঁচার জন্য নিচে এমন কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি দেয়া হলো যা অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনি এই রোগ থেকে বেঁচে থাকতে পারেনঃ

  1. স্বাস্থ্যকর ডায়েটঃ এ সময় আপনাকে উচ্চ ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক সূচকের খাবার যেমনঃ সবুজ শাকসবজি, শস্য এবং ফলমূল খান। এ সময় আপনি প্রসেসড খাবার, চিনি এবং উচ্চ কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাবেন না। বিশেষ করে যেসব খাবারে ফ্যাট এবং প্রোটিন রয়েছে সেসব খাবার আপনি খেতে পারেন।
  2. নিয়মিত ব্যায়ামঃ এই সিনড্রোম থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ইনসুলিন প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরী।
  3. ওজন হ্রাসঃ আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে ওজন কমাতে হবে। যার দরুন হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং মাসিক চক্র নিয়মিত করতে সহায়তা করবে।
  4. পর্যাপ্ত ঘুমঃ আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। যা আপনার হরমোনাল ভারসাম্য ও মেটাবলিজম ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  5. স্ট্রেস কমানোঃ আপনার দুশ্চিন্তা করলে চলবে না স্ট্রেস কমিয়ে রাখতে হবে। সেজন্য আপনি বিভিন্ন যোগ, ধ্যান এবং অন্যান্য স্ট্রেস কমানোর পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। এই পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে তা আপনার হরমোনাল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
  6. হারবাল সাপ্লিমেন্টঃ কিছু হার্বাল সাপ্লিমেন্ট রয়েছে যেমনঃ দারচিনি, স্পিরুলিনা, মেথি এসব উপাদান গ্রহণ করার ফলে আপনার ইনসুলিন প্রতিরোধ হরমোনাল ভারসাম্যে সাহায্য করতে পারে।
  7. পরিমিত ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহলঃ এই সময় আপনাকে অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য এবং অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। তা না হলে তা আপনার হরমোনাল ভারসাম্যে প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে।
  8. ধূমপান বর্জনঃ আপনাকে সম্পূর্ণভাবে ধূমপান বর্জন করতে হবে কেননা ধূমপান আপনার ইনসুলিন প্রতিরোধে হরমোনাল ও অসামঞ্জস্য বাড়াতে পারে।
  9. পরিমিত সময় সূর্যের আলোতে থাকাঃ এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে সূর্যের আলো গ্রহণ করতে হবে। কেননা সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি রয়েছে। আর এই ভিটামিন ডি নামক উপাদান হরমোনাল ভারসাম্য ইনসুলিন প্রতিরোধে আপনাকে সাহায্য করবো।

এই পদ্ধতি গুলো যদি আপনি অনুসরণ করেন তাহলে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে সহায়তা হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে এই পদ্ধতি গুলো কোন চিকিৎসার বিকল্প নয়। তাই আপনি যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা করতে চান তাহলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

পলিসিস্টিক ওভারি কেন হয়

পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানার পর আমাদের মনে হতে পারে কেন হয় পলিসিস্টিক ওভারি। তাহলে আসুন এখন আমরা এই সম্পর্কে জানবো। পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) একটি হরমোন জনিত সমস্যা। এই সিনড্রোম বিভিন্ন কারণে বিকাশ হতে পারে। নিচে কিছু কারণ দেওয়া হল যার মাধ্যমে জানতে পারি পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম কেন হয়ঃ

আরো পড়ুনঃ পাকা কদবেলের উপকারিতা । গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা

  • জিনগত প্রবণতাঃ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম টি জিনগতভাবে পুরো বংশের মধ্যে ছড়াতে পারে। যদি বংশের কারো এই রোগ হয়ে থাকে তাহলে বংশের অন্যান্য সদস্যদের এ অবস্থা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গবেষণা অনুযায়ী পলিসিস্টিক ওভারি এর বিকাশে জিনের একটি ভূমিকা রয়েছে।
  • ইনসুলিন প্রতিরোধঃ হাইপারইনসুলিনমিয়া পলিসিস্টিক ওভারি এর বিকাশে অবদান রাখে। এই হাইপারইনসুলিনমিয়াটা কি? এটা হল, যদি কোন শরীর ইনসুলিনের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে যায় তাহলে রক্তের শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে সক্ষম হবে না। তখন সে অবস্থাকে আমরা হাইপারইনসুলিনমিয়া বলি।
  • হরমোনের অস্বাভাবিক মাত্রাঃ মহিলাদের শরীরে অতিরিক্ত হরমোন হওয়ার ফলেও এই সিনড্রোম দেখা দিতে পারে। যদি মহিলাদের শরীরে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন তৈরি হয় তাহলে তার ডিম্বাণ চক্রের বিন্যাসে ব্যাঘাত ঘটায় বিভিন্ন উপসর্গের সৃষ্টি করে।
  • লাইফ স্টাইল ফ্যাক্টরঃ আপনার জীবনযাত্রার মানের ওপর নির্ভর করেও এই সিনড্রোম দেখা দিতে পারে। যদি আপনার খাদ্যাভাস ভালো না হয়, শারীরিক ব্যায়াম পর্যাপ্ত না হয় তাহলে ইনসুলিন প্রতিরোধের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যার ফলে পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোম এর বিকাশ হতে পারে।

এই কারণগুলির প্রভাবে সাধারণত পলিসিস্টিক ওভারি ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এর বিকাশ ঘটে থাকে এবং মহিলাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের বিভিন্ন জটিল সমস্যা সৃষ্টি করে। এই সমস্ত রোগ থেকে বেঁচে থাকতে হলে আমাদেরকে উপরে দেওয়া ঘরোয়া চিকিৎসা মেনে চলা জরুরী। তারপরেও যদি কোন বিশেষ সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তখন একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

পলিসিস্টিক ওভারি লক্ষণ

পলিসিস্টিক ওভারি লক্ষণ সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হওয়ার কিছু লক্ষণ রয়েছে বা বলতে পারেন এটি হওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেই লক্ষণ বা সমস্যা দেখার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হয়েছে এবং তার চিকিৎসা করতে পারবেন। 

পলিসিস্টিক ওভারি লক্ষণ

নিচে সেই লক্ষণ গুলো উল্লেখ করা হলোঃ

  1. বেশি ওজন হওয়া
  2. অনিয়মিত মাসিক চক্র
  3. গলায় কালো ছোপ হওয়া
  4. চুল পাতলা হয়ে যাওয়া
  5. তলপেটে ব্যথা অনুভূত হওয়া
  6. মুখে গলায় এবং বুকে অতিরিক্ত লোম হওয়া
  7. মাসুদ চক্রের সময় কমবা অতিরিক্ত দীর্ঘ পিরিয়ড হওয়া
  8. অতি উদ্বেগ এবং বিষন্নতা হওয়া
  9. অতিরিক্ত ওজনের ফলে শরীরে ডায়াবেটিস হাইপারটেনশন, রক্তের উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল জনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে
  10. মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে ব্রণ হওয়া
  11. বন্ধ্যাত্ব বা গর্ভধারণের সমস্যা দেখা দেওয়া

এছাড়াও পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম রোগীদের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন মিসক্যারেজ,  মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস হওয়া এমনকি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান প্রসবের মতন বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে।উপরোক্ত উল্লেখ করা লক্ষণ গুলি বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন হতে পারে। সবার মধ্যেই একই রকম লক্ষ্য দেখা দিবে বিষয়টি সেরকম নয়। 

আরো পড়ুনঃ কাঁকরোল এর উপকারিতা ও অপকারিতা

তবে সাধারণত এসব লক্ষণ গুলো মানুষের মাঝে দেখা দেয়। এসব লক্ষন জানার মাধ্যমে আমরা সহজেই  রোগ কে চিহ্নিত করে রোগ এর চিকিৎসা করার মাধ্যমে পলিসিস্টিক ওভারি থেকে বেঁচে থাকতে পারেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানলে ভালো হত। 

তাহলে এর উত্তরে বলতে হয়, উপরে এই সম্পর্কে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনি যদি চান তাহলে উপর থেকে দেখে আসতে পারেন।

পলিসিস্টিক ওভারি ডিজিজ বা PCOD ডায়েট চার্ট

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) বা পলিসিস্টিক ওভারি ডিজিজ (PCOD) আক্রান্ত রোগীদের জন্য ডায়েট চার্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন আপনি যখন জানলেন ঘরোয়া চিকিৎসা পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর তখন আপনার কাজ হলো ঘরোয়া ভাবে কোন কোন খাবার কিভাবে খাওয়ার মাধ্যমে এই রোগ থেকে বেচে থাকা যায়। 

কেননা এ অবস্থায় আপনি যদি সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেন তাহলে এটি আপনার রোগের কমানোর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সঠিক খাদ্যাভাস গ্রহণ করার ফলে এটি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। 

নিচে একটি সাধারণ ডায়েট চার্টের উদাহরণ দেওয়া হলঃ

সকালের নাস্তা

  • সকালের নাস্তা হিসেবে আপনি ওটমিল বা দলীয় খেতে পারেন
  • সাথে তাজা ফলমূল খেতে পারেন

দুপুরের খাবার

  • দুপুরের খাবারে বাদামি চালের ভাত
  • সাথে শাকসবজি এবং ডাল জাতীয় তরকারি
  • তার সাথে সালাত খেতে পারেন

বিকালের নাস্তা

  • তেল ছাড়া বিভিন্ন খাবার যেমন মুড়ি বা পপকর্ন খেতে পারেন
  • সবজির স্টিক বানিয়ে খেতে পারেন

রাতের খাবার

  • রাতের খাবার হিসেবে গ্রিল করা চিকেন বা মাছ খেতে পারেন
  • তার সাথে বাদামি চাল খাওয়া যায়
  • সাথে সেদ্ধ করা সবজি খেতে পারে্ন

**সারাদিনের জন্য কিছু নিয়ম**

  • সারাদিনে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে থাকতে হবে
  • যে সকল খাবারে চিনি বা ময়দা ব্যবহার করা হয় জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
  • গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং হাই ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে

এটি একটি সাধারণ ডায়েট চার্টের উদাহরণ। সাধারণত এই চার্টি অনুসরণ করার মাধ্যমে পলিসিস্টিক ওভারি ডিজিজ (PCOD) আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে উপকার হতে পারে। তবে প্রত্যেক শরীরে বিভিন্ন হওয়ায় ব্যক্তিগত পুষ্টি পরামর্শের সাথে পরামর্শ করে একটি ডায়েট চার্ট তৈরি করে নেওয়া খুবই ভালো হবে।

পলিসিসটিক ওভারি ভালো হলে কি বাচ্চা হবে

অনেকেই জানতে চান পলিসিস্টিক ওভারি এই সিনড্রোম টি ভালো হলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা আছে কি নেই। আজকে আমরা এই প্যারাতে এ সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই এই প্যারাটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আপনি জানতে পারবেন পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোম ভালো হওয়ার পরে গর্ভধারণের সম্ভাবনা রয়েছে কি নেই। 

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার নিয়ম । জাফরান খাওয়ার উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

পলিসিসটিক ওভারি একটি জটিল অবস্থা যা মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তবে আপনি যদি খাদ্যাভাসের চার্ট, নির্দিষ্ট লাইফ স্টাইল এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী  চিকিৎসা করান তাহলে অনেক মহিলাই পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোম থেকে ভালো হওয়ার পরেও গর্ভধারণ করতে সক্ষম হন।

পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোম ভালো হওয়ার পরে গর্ভধারণের  সম্ভাবনা বাড়ে। তবে এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে সবার ক্ষেত্রেই বাচ্চা হবে। একেকজনের প্রজনন ক্ষমতা এক এক রকম সেহেতু আপনি যদি আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়াতে চান। তাহলে বিভিন্ন প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির চিকিৎসা যেমনঃ ইনভিট্রোফার্টিলাইজেশন (IVF) বা ইন্ট্রাউটারিন ইনসেমিনেশন (IUI) এর মতো পদ্ধতি গুলো আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

তাহলে আমরা জানতে পারলাম পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোম এর চিকিৎসা এবং সঠিক পরিচর্যা নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ যদি করেন তাহলে এই সিনড্রোম থেকে রক্ষা পাওয়ার পরেও আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি হতে পারে। তবে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া খুবই ভালো হবে।

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এর চিকিৎসা

এখন আমরা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানবো। পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম একটি হরমোন জনিত সমস্যা। এই সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে হলে আমরা বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি।

নিচে পদ্ধতি গুলো উল্লেখ করা হলোঃ

প্রথমেই= আমরা জীবনযাত্রার পরিবর্তন যেমনঃ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান বর্জন ইত্যাদি করার মাধ্যমে এই সিনড্রোম থেকে বেঁচে থাকতে পারি। এছাড়াও ওজন হ্রাস করা, অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা, বিভিন্ন তৈলাক্ত জাতীয় খাবার, চিনি বা ময়দা মিশ্রিত খাবার এড়িয়ে চলার মাধ্যমে এই সিনড্রোম থেকে বেঁচে থাকতে পারি।

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এর চিকিৎসাদ্বিতীয়ত= ঔষধ প্রয়োগের ক্ষেত্রেঃ বিভিন্ন ঔষধি পদ্ধতিতে, চিকিৎসা করার পদ্ধতিতে আমরা এই পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোম থেকে বেঁচে থাকতে পারি। লো ডোজ ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিলস এই ওষুধটি আমরা ব্যবহার করতে পারি সিনড্রোমের দ্বারা দেখা দেওয়া বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে যেমনঃ অনিয়মিত মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে এবং অতিরিক্ত লোম বৃদ্ধি হ্রাস। 

এছাড়াও ইনসুলিন প্রতিরোধ কমাতে এবং প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি ঔষধ ব্যবহার করতে পারি যার নাম মেটফরমিন। এছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা হিসেবে আমরা ইনসুলিন-সেনসিটাইজিং, হরমোন থেরাপি, এজেন্টস এবং অকারণে বিভিন্ন জায়গায় গজানোর লোম অপসারণের মাধ্যমে লেজার থেরাপি বা ইলেক্ট্রোলাইসিস পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে এই পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম রোগের চিকিৎসা করতে পারি।

তবে মনে রাখতে হবে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এর চিকিৎসা, রোগের লক্ষণ ও প্রজনন ক্ষমতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ব্যক্তিগতভাবে নির্ধারণ করা হয়। কেননা একেক জন এর সমস্যা এক এক রকম দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করার জন্য একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত। 

আর যদি আপনি জানতে চান ঘরোয়া চিকিৎসা পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর তাহলে উপরে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। চাইলে যেয়ে দেখে আসতে পারেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url