মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম - মরিঙ্গা পাউডার ২০টি উপকারিতা
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম এবং মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতা সম্পর্কে জানা সত্যিই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই মরিঙ্গা পাউডারে কত উপকার রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা। আমি আপনাকে এখানে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার ২০টি উপকারিতা জানাবো। তাই ধৈর্য ধরে আর্টিকেলটি পরতে থাকুন।
আজকে আমরা এই আর্টিকেলে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম, মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতা এবং মরিঙ্গা পাউডার সম্পর্কিত আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তাই চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
পেইজ সূচিপত্রঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম - মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতা
মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতা - মরিঙ্গা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে আসি
মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে আমাদের জানতে হবে মরিঙ্গা পাউডার টা কি। মরিঙ্গা পাউডার মূলত সজনে পাতা গুড়াকে বলা হয়। সজনে পাতার গুড়া এবং মরিঙ্গা পাউডার একই জিনিস শুধু নাম আলাদা। এই মরিঙ্গা পাউডার আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী এবং এতে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
এখানে আমরা মরিঙ্গা পাউডার এর ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানবো। চলুন তাহলে জেনে আসি সেই উপকারিতা গুলো।
এক নজরে ২০টি মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতাঃ
- শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে
- লিভার সুস্থ রাখতে
- পেটের সমস্যাই
- শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
- প্রদাহ কমাতে
- কোলেস্টরেল কমাতে
- ক্যান্সার প্রতিরোধে
- অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
- আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধ
- আর্সেনিক দূর করতে
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
- শুক্রাণু বৃদ্ধিতে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
- এজমা নিরাময়
- কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
- ত্বকের যত্নে
- হাড় মজবুত করতে
- চোখের সুস্বাস্থ্য
- হজম বৃদ্ধিতে
শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতেঃ শারীরিক দুর্বলতা আমাদের অনেকের মধ্যেই থাকে। এই দুর্বলতার অন্যতম প্রধান কারণ পুষ্টির অভাব। সজনে পাতার গুড়া অথবা মরিঙ্গা পাউডারে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার পুষ্টি বিপুল পরিমাণে রয়েছে। তাই আপনি যদি নিয়মিত সঠিক পদ্ধতিতে খাঁটি মধুর সাথে মরিঙ্গা পাউডার গ্রহণ করেন তাহলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি শরীরের শক্তি ফিরে পাবেন এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর হবে।
লিভার সুস্থ রাখতেঃ সাধারণত যদি আপনার লিভারে ফ্যাটি এসিড জমে তাহলে আপনার অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এই মরিঙ্গা পাউডার আপনার লিভারের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে ফ্যাটি এসিড জমা বন্ধ করে। এমনকি লিভার সিরোসিস সহ লিভারের অন্যান্য রোগ থেকে এই মরিঙ্গা পাউডার সুরক্ষা প্রদান করে।
পেটের সমস্যায়ঃ মরিঙ্গা পাউডারের এন্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল নামক দুটি উপাদান থাকে। এ দুটো উপাদান আমাদের পেট ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার খাওয়ার পর আমাদের অনেকের পেটে এসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তার জন্য আমরা গ্যাসের ওষুধ খেয়ে থাকি। তার চেয়ে যদি প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তাহলে কতই না ভালো হয়। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রতিদিন মরিঙ্গা পাউডার সেবন করতে হবে।
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেঃ আপনার শরীরে শর্করার মাত্রা যদি বেশি হয় তাহলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এমন কি হার্টের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এই মরিঙ্গা পাউডার প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে রক্তে থাকা এই শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এতে আপনার ডায়াবেটিস একেবারে কম হয়ে যায়। অন্যদিকে শর্করার প্রভাবে হতে পারে এমন সকল সম্ভাব্য রোগ থেকে এটি আপনাকে নিরাপদ রাখে।
প্রদাহ কমাতেঃ আপনার শরীরে যদি ব্যথা থেকে থাকে এবং অনেক ধরনের ব্যাথাও অনুভব করে থাকেন তাহলে আপনি সজনে পাতার গুড়া বা মরিঙ্গা পাউডার খেতে পারেন। কেননা মরিঙ্গা পাউডারে প্রদাহ বিরোধী উপাদান থাকে। যার ফলে আপনার ব্যথা উপশম হতে সহায়তা করে।
কোলেস্টরেল কমাতেঃ আমাদের শরীরের মধ্যে রক্তে থাকা এলডিএল ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল দূর করে এই মরিঙ্গা পাউডার এবং উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুনঃ ভাতের মাড়ের ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতা- ভাতের মাড়ের রূপচর্চা
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ক্যান্সার একটি মারাত্মক মরণব্যাধি রোগ। আপনি যদি ক্যান্সার কে প্রতিরোধ করতে চান তাহলে এই ক্যান্সারের কোষ গঠন হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দিতে হবে। মরিঙ্গা পাউডারে নিয়াজিমিসিন নামে একটি উপাদান রয়েছে যা আপনার ক্যান্সার কোষ তৈরি হওয়া থেকে প্রতিরোধ করে।
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ মরিঙ্গা পাউডার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যার ফলে মরিঙ্গা পাউডার দেহের জন্য প্রয়োজনে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে এবং দেহে অবস্থিত বিভিন্ন রোগ থেকে এবং নতুন রোগ প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধেঃ আপনার যদি পেশির ব্যথা, হাড়ের ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা নিরাময় করতে চান তাহলে মরিঙ্গা পাউডার খান। কেননা মরিঙ্গ পাউডার উচ্চ ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা আপনাকে এই সকল ব্যাথা থেকে মুক্তি দিবে।
আর্সেনিক দূর করতেঃ আর্সেনিক আমাদের শরীরের অনেক ধরনের ক্ষতি করে থাকে যেমনঃ ত্বকের, হার্টের, স্কিন ক্যান্সার আরো অনেক। আপনি যদি মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করেন তাহলে তাতে থাকা পুষ্টি উপাদান এই আর্সেনিকের বিষাক্ততা দূর করতে সাহায্য করবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ মরিঙ্গা পাউডারে পটাশিয়াম লবন থাকে যা দেহের কোন ক্ষতি করে না উল্টো রক্ত সঞ্চালন ধারা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। এমনকি মরিঙ্গা পাউডারের প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রণ থাকে যা রক্তের বিভিন্ন উপাদান তৈরি করে। এতে আপনার দেহে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি হয় এবং ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে।
শুক্রাণু বৃদ্ধিতেঃ পুরুষের শরীরের শুক্রানু বৃদ্ধি করতে মরিঙ্গা পাউডার অনেক উপকার করে থাকে। মরিঙ্গা পাউডার এমনকি মহিলাদের মাসিকের সময় এবং গর্ভবতী অবস্থায় হওয়া বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ মরিঙ্গা পাউডার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারি। আপনি যদি শর্করার মাত্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাহলে আপনি ডায়াবেটিস হাত থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন। মরিঙ্গা পাউডারের থাকা ক্লোরোজেনিক নামক এক ধরনের অ্যাসিড এবং ফাইটোকেমিক্যাল নামক উপাদান আপনার শরীরের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
এজমা নিরাময়ঃ এজমা নিরাময়ের জন্য এবং বিভিন্ন মৌসুমী রোগ যেমন সর্দি-কাশি ইত্যাদি সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার হয়ে আসছে।
কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধেঃ মরিঙ্গা পাউডারে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে থাকে। আমরা জেনেছি যে মরিঙ্গা পাউডার রক্তের শর্করা মাত্রা কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এগুলো সরাসরি হার্টের সাথে সম্পর্কিত। এগুলো নিয়ন্ত্রণ হলে আপনি হার্টের রোগ থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ মরিঙ্গা পাউডার প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান রয়েছে। যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এমন কি এতে থাকা অ্যামাইনো এসিড আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শারীরিক দুর্বলতা দূর করে থাকে।
ত্বকের যত্নেঃ আপনার কি ত্বকে কালো দাগ হয়েছে? আপনার কি চিন্তা হচ্ছে বয়স হওয়ার সাথে আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ যেন না পড়ে যায়। তাহলে আপনি মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। মরিঙ্গা পাউডার আপনার ত্বকের বলি রেখা দূর করে সাথে সাথে ব্রণ, কালো দাগ এবং ত্বক পরিষ্কার করতে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সেজন্য দেখবেন অনেক ত্বকের যত্নের প্রোডাক্ট এর সাথে মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
হাড় মজবুত করতেঃ মরিঙ্গা পাউডারের প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান থাকে যে খনিজ উপাদান গুলো আমাদের দেহের বিভিন্ন কর্মক্ষমতা পরিচালিত করে থাকে। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম নামক উপাদান আমাদের দেহের হাড় সুগঠিত করতে সাহায্য করে থাকে। হাড়ের ব্যথা সহ সকল ধরনের হাড়ের সমস্যা দূর করে।
চোখের সুস্বাস্থ্যেঃ চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে এবং চোখের স্বাস্থ্য উন্নতি করতে মরিঙ্গা পাউডার খুবই উপকারী। কেননা মরিঙ্গা পাউডার এ থাকা বিটা ক্যারোটিন চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
হজম বৃদ্ধিতেঃ মরিঙ্গা পাউডার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। কেননা এতে থাকা দ্রবণীয় এবং ও দ্রবণীয় খাদ্য আস হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী এনজাইম গুলোকে সচল করে। এর ফলে আপনার লিভারের স্বাস্থ্য যেমন ঠিক থাকবে তেমনি হজম প্রক্রিয়া সুস্থভাবে সম্পন্ন হবে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
মরিঙ্গা পাউডারকে সুপার ফুড বলা হয়ে থাকে। কেননা এতে মানব শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সকল ভিটামিন ও মিনারেল উপস্থিত রয়েছে। অনেক পুষ্টি বিশেষজ্ঞগণ এই পাউডারের পুষ্টি গুণের উপর চিন্তা করে মরিঙ্গা পাউডার নিয়মিত প্রতিদিন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে সকালে দুপুরে ও রাতে যেকোনো সময় এই খাবার আপনি খেতে পারবেন।
তবে মনে রাখবেন আপনি খালি পেটে হন আর ভরা পেটেই হন মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা নিষেধ নেই। নিচে আমরা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার কিছু নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সকাল বেলা
সকালে খালি পেটে মরিঙ্গা পাউডার যদি খান তাহলে এটি আপনার সারা শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং পুষ্টি যোগায়। তাছাড়া যদি আপনি ভরা পেটে মরিঙ্গা পাউডার খান তাহলে খাবারগুলো অন্য খাবারের সাথে পাকস্থলীতে গিয়ে তারপর দেহের সব জায়গায় পৌঁছাতে একটু বেশি সময় লাগে।
তাই বিশেষজ্ঞগণ সকালে খালি পেটে মরিঙ্গা খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদিও মরিঙ্গা পাউডারের কোন ক্যাফেইন জাতীয় জিনিস থাকে না তারপরও শরীর, মনকে সতেজ রাখতে এবং শরীরের প্রাকৃতিক শক্তি বৃদ্ধি করতে মরিঙ্গা পাউডার খুবই কার্যকরী।
রাতের বেলা
আমরা সারাদিনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পর রাতে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ঘুমিয়ে থাকি। এই সময় শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন পড়ে। এই মরিঙ্গা পাউডারে আমাদের শরীরের সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং এটি আমাদের শরীরকে সরবরাহ করে থাকে। বিশেষ করে রাতের বেলা মরিঙ্গ পাউডার দ্রুত হজম হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে যায় এবং ফ্রেশ ঘুম হয়ে থাকে।
সরাসরি খেতে পারেন
আপনি চাইলে মরিঙ্গা পাউডার অন্য কোন খাবারের সাথে না খেয়ে শুধুই পাউডারটি খেতে পারেন। এর ফলে আপনার এই পাউডারটি অতি দ্রুত হজম হয়। তবে এভাবে খাওয়া সবার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে কেননা মরিঙ্গা পাউডার একটি শুকনো খাবার। সেহেতু আপনি এই পাউডারকে দুধের সাথে বা পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
রসের সাথে
আপনি চাইলে মরিঙ্গা পাউডারকে বিভিন্ন রসের সাথে খেতে পারেন অথবা বিভিন্ন ফলের জুস বানিয়ে এর সাথে খেতে পারেন। এই মরিঙ্গা পাউডার আমাদের শরীরের টক্সিক উপাদানগুলোকে বের করে দেয় এবং শরীরকে সুস্থ রাখে। আপনি এই মরিঙ্গা পাউডার লেবুর শরবত দিয়েও খেতে পারেন। এটি অনেক উপকারী বলে সাব্যস্ত হবে।
চায়ের সাথে
আচ্ছা আমরা সবাই মোটামুটি চা খেতে পছন্দ করে থাকি এবং খেয়েও থাকি। আপনি যদি চায়ের সাথে মরিঙ্গা পাউডার খান তাহলে এটি আরো পুষ্টি উপাদান বাড়িয়ে তুলবে এবং এটি খুবই উপকারী হবে এবং এটি সহজভাবে অতিরিক্ত খরচের প্রয়োজন হবে না। চা খাচ্ছেন তখন মরিঙ্গা পাউডার ঢেলে দেবেন আর খেয়ে নিবে। বিশেষ করে এটি আপনি গ্রিন টি হিসেবে খেতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ বীর্যমনি গাছের ৩টি আকর্ষনিয় উপকারিতা- বীর্য মূলের উপকারিতা
কেকের সাথে
আমরা সবাই কেক খেতে মোটামুটি পছন্দ করে থাকি। আমরা যদি কেকের সাথে মরিঙ্গা পাউডার খায় তাহলে এটি খুবই মজাদার হবে এবং উপকার হবে। মরিঙ্গা পাউডার দিয়ে কেক তৈরি করলে আপনি এটি অনেক সময় ধরে খেতে পারবেন।
বড়ি বানিয়ে
উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো যদি আপনার কাছে কঠিন হয়ে থাকে তাহলে আপনি একটা সহজ কাজ করতে পারেন আমাদের গ্রামে আমরা অনেকেই নিম পাতার বড়ি বানিয়ে থাকি। আপনি চাইলে মরিঙ্গা পাউডার কে বড়ি বানিয়ে রাখতে পারেন। তাহলে এটি আপনি ওষুধের মতো করে সকালে এবং রাতে খেতে পারবেন। এতে আপনার অতিরিক্ত কোন ঝামেলা করতে হবে না।
মিক্সড ফুডের সাথে
মধুর সাথে খেতে পারেন, ড্রাই ফুডের এর সাথে খেতে পারেন অথবা বাজার থেকে হানি নাট, ফুড জেলি ইত্যাদি যার সাথে চান তার সাথেই আপনি খেতে পারেন। এটি অনেক উপকারী হবে এবং অনেক গুনাগুন বৃদ্ধি পাবে এবং সাদও বাড়বে আশা করা যায়। আপনি চাইলে এটি বিভিন্ন মিক্সড ফুডের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
মরিঙ্গা পাউডার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
মরিঙ্গে পাউডার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য খুবই জরুরি. যদিও মরিঙ্গা পাউডারের তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। এতে প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। তবুও প্রত্যেক খাবারের মতন এই খাবারেরও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। নিচে আমরা সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরছি।
- বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭০ গ্রামের বেশি মরিঙ্গা পাউডার যদি আপনি খান তাহলে এটি আপনার দেহের ভিটামিন ও মিনারেল উপাদানের সাথে বিক্রিয়া করে বিষাক্ত করে ফেলতে পারে। তাই বেশি পরিমাণে মরিঙ্গা পাউডার না খেয়ে পরিমিত মাত্রায় খাবেন।
- যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তারা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। যদিও দেহের পুষ্টি উপাদান ঠিক রাখার জন্য পরিমিত মাত্রায় এটি খাওয়া যাবে। তবে যদি আপনি বেশি পরিমাণে মরিঙ্গা পাউডার খেয়ে নিন তবে এটি আপনার কিডনির সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে।
- যদিও মরিঙ্গা পাউডার রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তবে এটা মনে করবেন না যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধুই মরিঙ্গা পাউডার খেলে যথেষ্ট হবে। আপনাকে তার সাথে আরো অন্যান্য ওষুধ চালিয়ে যেতে হবে এর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত হবে।
- সাধারণত সজনে পাতার ডাল শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়। বিশেষ করে গর্ভকালীন সময় এগুলো শরীরের প্রবেশ করলে ইমিউনিটি সিস্টেমের ক্ষতি করে। এজন্য গর্ভকালীন সময়ে মরিঙ্গা পাউডার অনেক বিশেষজ্ঞগণ খেতে মানা করেন।
- অতিরিক্ত পরিমাণে যদি আপনি মরিঙ্গা পাউডার খান তাহলে আপনার হজম প্রক্রিয়ার সমস্যা হতে পারে। বেশি পরিমাণে খেলে বমি ভাব হতে পারে, খুদা মন্দা, পেটেের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, এমনকি অস্থিরতা অনুভব করতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত হবে।
- আপনি যদি ব্লাড প্রেসারের রোগী হয়ে থাকেন এবং নিয়মিত ওষুধ খান তাহলে মরিঙ্গা পাউডার খাবেন না। কেননা মরিঙ্গা পাউডার আপনার প্রেসার কম করে আর আপনি তার সাথে যদি ওষুধ খান তাহলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ব্লাড প্রেসার কমে গেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে।
- তাছাড়া আরো কিছু ওষুধ রয়েছে যার সাথে মরিঙ্গা পাউডার দিমুখী আচরণ করে। যার ফলে আপনার শরীর ক্ষতির মধ্যে পড়তে পারে। তাই যদি আপনি কোন ওষুধ খেয়ে থাকেন কোন রোগের জন্য তাহলে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
মরিঙ্গা পাউডার কোথায় পাওয়া যায় - মরিঙ্গা পাউডার দাম - moringa powder bd
মরিঙ্গা পাউডার কোথায় পাওয়া যায় আর মরিঙ্গা পাউডার দাম দুটো একই বিষয়। তাই আমি একই জায়গায় উল্লেখ করছি। আপনি যদি এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। আপনি বিভিন্ন জায়গায় মরিঙ্গা পাউডার কিনতে পারবেন এমনকি বানাতেও পারেন। আপনি লোকাল মার্কেটে বলেন
আর অনলাইন বিভিন্ন স্টোরে বলেন আপনি যেখান থেকে চান সেখান থেকে কিনতে পারেন। যদি আপনি অনলাইন মাধ্যমে কিনতে যান তাহলে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন রকম দাম দেখতে পাবেন দেখবেন যে কেউ ১০০ গ্রামের দাম নির্ধারণ করেছে ১১৯ টাকা আবার কেউ ৮০ গ্রামের দাম নির্ধারণ করেছে ২০০ টাকা
আবার কেউ ১০০ গ্রামের দাম নির্ধারণ করেছে ২০০ টাকা। আর যদি আপনি ২৫০ গ্রাম কিনতে যান তাহলে আপনার খরচ পড়বে ৪৮০ টাকা। আর যদি ৫০০ গ্রাম কিনতে যান তাহলে খরচ পড়বে ৯৫০ টাকা। এখন এটা নির্ভর করছে আপনার উপর আপনি কোন ওয়েবসাইট থেকে কিনছেন। আপনি যেখান থেকে কিনবেন সে ওয়েবসাইটেই আপনি দাম লেখা আছে দেখবেন।
সেটা দেখে কথাবার্তা বলে তারপর অনলাইনে অর্ডার করবেন। তাছাড়া যদি আপনি চান যে আপনি বাজার থেকে কিনবেন তাও কিনতে পারেন। মুদি দোকানেও পাওয়া যেতে পারে আবার সব গ্রামেও পাওয়া যায় না তাই বেশিরভাগ মানুষ অনলাইনে কেনার প্রতি ঝুঁকছে।
শেষ কথাঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম - মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতা
প্রাণপ্রিয় পাঠক মন্ডলী!! আশা করছি আপনি যে বিষয় সম্পর্কে জানতে এসেছিলেন তা জানতে পেরেছেন। আমরা এখানে পুরো আর্টিকেল জুড়ে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম, মরিঙ্গা পাউডার উপকারিতা, মরিঙ্গা পাউডার দাম, মরিঙ্গা পাউডার কোথায় পাওয়া যায়, মরিঙ্গা পাউডার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
এই আর্টিকেল পড়ার পর যদি আপনার কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা আপনার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা পুরো আর্টিকেল জুড়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। যদি আপনার কাছে আর্টিকেলে কোন ভুল ধরা পড়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাবেন।
আমরা তা পরবর্তীতে সংশোধন করার চেষ্টা করবো। যদি আপনি মনে করেন যে এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং অন্যদেরকে উপকৃত করতে চান তাহলে আপনি বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের নিকট আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন যাতে তারা উপকৃত হতে পারে। এটাই আমাদের কাম্য।
নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url