কলার মোচার ১৪টি কার্যকরি উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার মোচার পুষ্টিগুণ
আজকে আমরা এই আর্টিকেলে কলার মোচার উপকারিতা ও অপকারিতা কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা কলার মোচার পুষ্টিগুণ এবং কলা মজা সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব তাই চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
পেইজ সূচিপত্রঃ কলার মোচার উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার মোচার পুষ্টিগুণ
কলার মোচার পুষ্টিগুণ
কলার মোচার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানার পূর্বে আমাদের জানতে হবে কলার মজা আসলে কি আমরা কিভাবে চিনব কলার মোচাকে আমরা সকলেই কমবেশি কলার গাছ চিনি কলার গাছের কলার কাজের শেষ প্রান্তে যে না ফোটা ফুল থাকে সেই ফুলের করি কে কলার মোচা বলা হয় এই কলার মোচা প্রচুর পুষ্টি উপাদানের পরপুর এবং এতে প্রচুর উপকারিতা রয়েছে আমরা সবাই কলার উপকারিতা জানি কিন্তু কলার মোচা থেকে কত প্রকার রয়েছে তা কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কলাতে যেসব পুষ্টি রয়েছে কলার মোচাতেও সেসব পুষ্টিগুণ রয়েছে তাছাড়া আরও যেসব পুষ্টিগুণ রয়েছে সে সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করা হলো
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
কার্বোহাইড্রেট | ৫.১ গ্রাম |
প্রোটিন | ১.৭ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.৭ গ্রাম |
আস | ১.৩ গ্রাম |
ভিটামিন এ | ২৭ আই ইউ |
ভিভো ফ্ল্যাবিন | .০২ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৩২ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ৪২ মিলিগ্রাম |
লোহা | ১.৬ মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ১৮৫ মিলিগ্রাম |
অক্সালিক এসিড | ৪২০ মিলিগ্রাম |
থায়ামিন | .০৫ মিলিগ্রাম |
কলার মোচার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে আসি
কলার মোচার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ধারণা খুব কম মানুষের রয়েছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই কলা খেতে পছন্দ করে এবং কাঁচা কলার তরকারি খেতে পছন্দ করে কিন্তু অনেকেই জানে না কলার মোচা রান্না করে খাওয়া যায়
এবং এতে প্রচুর উপকার পাওয়া যায় আমরা উপরে কলার মোচার পুষ্টিকর সম্পর্কে জেনে এসেছি এখন আমরা কলার মোচার উপকারিতা সম্পর্কে জানব এখানে কলার মোচার ১৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব তাই চলুন জেনে আসি সে উপকারিতা গুলো।
এক নজরে ১৫ টি কলার মোচার উপকারিতাঃ
- ভিটামিনের অভাব পূরণ করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
- পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম এর সমস্যা কমায়
- ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে
- মন ভালো রাখে
- হাড়ের ক্ষয় রোধ করে
- হজম করতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য
- সকালবেলা দুর্বল অনুভব করা
- পিরিয়ডের সমস্যা
- ত্বকের ক্ষেত্রে
- বুকের দুধ বৃদ্ধি করা
- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে
- রক্তশূন্যতা দূর করতে
- চুলের উজ্জ্বলতা ফেরাতে
ভিটামিনের অভাব পূরণ করে
কলার মোচাতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। যেমন ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এমনকি খনিজ ও রয়েছে। কলার মোচাতে বিশেষ করে যাদের ভিটামিনের অভাব রয়েছে তারা যদি কলার মোচা খান নিয়মিত ভাবে তাহলে তাদের ভিটামিনের অভাব পূরণ হবে। বিশেষ করে গর্ভকালীন মহিলাদের নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া উচিত। কেননা তারা যদি নিয়মিত কলার মোচা খান তবে তাদের বাচ্চারা অনেক বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন হবে এবং তাদের পরিপূর্ণ বিকাশে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃ কচুর লতিতে এলার্জি । কচুর লতি খেলে কি এলার্জি হয় ??
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
বর্তমানে অনেক মানুষই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। আমরা অনেক ভাবে ডায়াবেটিস কমানোর চেষ্টা করি কিন্তু ডায়াবেটিস কমানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। কলার মোচা হলো লো গ্লাইসেমিক সূচক খাদ্য এতে রয়েছে ফ্যানোলিক এসিড এবং অন্যান্য বায়োঅ্যাকটিভ।যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ফলে খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাদের নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া উচিত। তাহলে আমরা খুব সহজে ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত হতে পারব।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমের সমস্যা কমায়
বর্তমানে অনেক মানুষের পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম দেখা যায়। বিশেষ করে অনেক নারীদেরও। যদি আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত কলার মোচা খেতে হবে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে কলার মোচা এই সকল সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে।
ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে
ক্যান্সার খুবই মারাত্মক একটি অসুখ। যা আমাদের সমাজে অভিশাপের মত রয়েছে। এই মারাত্মক ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে আমাদেরকে কলা মোচা খাওয়া উচিত। কেননা এতে থাকে ফ্যানেরিক এসিড, ট্যাঁনিন, ফ্লেভানয়েড ও নানা ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ফ্রি রেডিকেল ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
এই উপাদানগুলো কলার মোচাতে থাকার কারণে খুব সহজে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় এবং সেই সাথে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতেও কলার মোচা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
মন ভালো রাখে
মন ভালো না থাকা সব সময় বিষন্নতা বা উদ্বিগ্নের ভিতরে থাকা এটি অনেক মানুষেরই একটি কমন রোগ। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের মুড সুইং এর সমস্যা থাকে। এইসব সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে আপনাকে কলার মোচা খেতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে কলার মোচা।
কলার মোচা খেলে আপনি প্রাকৃতিকভাবে এই সকল সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। আপনাকে কোন এন্টি ডিপ্রেশনের জন্য আলাদা করে ওষুধ খেতে হবে না। কেননা কলার মোচায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম এবং এটি মন ভালো রাখার হরমোনের ক্ষরণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সে জন্য আপনার মন সবসময় ভালো থাকবে।
হাড়ের ক্ষয় রোধ করে
আমরা অনেকই হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে যারা বৃদ্ধ তারা অনেকেই হারের ক্ষয়জনিত অসুখে ভুগছেন, খুব কষ্ট পাচ্ছেন বুঝে উঠতে পারছেন না কি করবেন। এই সকল সমস্যার সমাধান করার জন্য আপনারা কলার মোচা খেতে পারেন। কেননা কলার মোচাতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা নিয়মিত খেলে আপনার হারের ক্ষয় জনিত অসুখ প্রতিরোধ করবে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কলার মোচাতে রয়েছে কুয়েরসেটিন এবং কেটেচিনস এই দুই উপাদান যা হার এর ক্ষয় রোধ করে। তাই আপনি যদি হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগে ভুগেন তাহলে আপনি এখনই নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া শুরু করুন। আশা করা যায় আপনারা হারের ক্ষয় জনিত অসুখ থেকে মুক্তি লাভ করবেন।
হজম করতে ও কষ্টকাঠিন্য
আমাদের মধ্যে হজম করতে সমস্যা হয় এমন রোগের রোগীর সংখ্যা অনেক এবং আমরা অনেকই কষ্টকাঠিন্য নামক সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের কষ্টকাঠিন্য ও পেটের সমস্যা একটি সাধারণ সমস্যা। এই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে নিয়মিত কলার মোচা খেতে হবে।
কেননা কলার মোচাতে রয়েছে ১.৩ গ্রাম আস। যা হজম করতে সাহায্য করে এবং কষ্টকাঠিন্য থেকে মুক্ত করে। এমনকি কলার মোচা উচ্চ দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ। কলার মোচা উচ্চ দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় বিভিন্ন পেটের সমস্যা যেমন কষ্ট কাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিক এ সকল সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে।
সকালবেলা দুর্বল অনুভব করা
এ সকল সমস্যা বিশেষ করে অধিকাংশই গর্ভবতী মহিলাদের হয়ে থাকে। গর্ভবতী মহিলারা সকালবেলায় অসুস্থতা অনুভব করেন এবং এটা খুবই অস্বস্তিকর হয় তাদের ক্ষেত্রে। এমনকি অনেক সময় বমি বমি ভাব তাদের মধ্যে কাজ করে আপনি যদি এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান এবং সর্বদা সুস্থ স্বাভাবিক থাকতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত কলার মোচা খেতে হবে।
আর কলার মোচা খাওয়ার একটি পজিটিভ দিক হলো এটি একটি প্রাকৃতিক ঔষধ আপনাকে অন্য কোন ওষুধ বাহির থেকে কিনে খেতে হবে না। প্রাকৃতিক ভাবেই এটি আপনার অসুস্থতা দূর করতে সাহায্য করবে।
পিরিয়ডের সমস্যা
বর্তমানে অধিকাংশ নারী অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগছেন। নিয়মিত পিরিয়ড সম্পাদনের এই চক্র যেন ঠিক থাকে কোন ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য আপনাকে নিয়মিত কলার মোচা খেতে হবে। কেননা কলার মোচাতে এমন প্রকার উপাদান রয়েছে যা আপনার পিরিয়ড চলাকালীন ব্যথা, যন্ত্রণা কম করে। সেই সঙ্গে উৎপাদন বৃদ্ধি করে যার ফলে আপনার রক্তস্বল্পতা কমায়।
ত্বকের ক্ষেত্রে
আপনার ত্বক ভালো ও উজ্জ্বল রাখতে, ত্বক থেকে যেকোনো কালো দাগ দূর করতে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করতে আপনাকে অবশ্যই কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। কেননা কলার মোচাতে এত পুষ্টিগুণ রয়েছে যেসব পুষ্টিগুণ আপনার এই সকল সমস্যা থেকে মুক্ত দিতে সাহায্য করে।
কলার মোচাতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং এন্টি অক্সিডেন্ট যা আপনার অকালে বৃদ্ধ হওয়া ও বয়সের ছাপ করা ধীর করে। এছাড়াও ত্বকের গঠন উন্নত করতে এবং ত্বকের বলিরেখা কমাতে কলার মোচা খুবই উপকারী। সেহেতু আমাদের নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া উচিত।
বুকের দুধ বৃদ্ধি করা
প্রত্যেক শিশুই জন্মের পর থেকেই মায়ের বুকের দুধ পান করে বড় হয়। প্রত্যেক মায়ের জন্য এই মুহূর্তটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য প্রত্যেক মায়ের সচেতন হওয়া উচিত নিজের স্তনের দুধের প্রতি। আপনারা যদি নিয়মিত কলার মোচা খান তাহলে আপনার বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে এটি সাহায্য করবে।
আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা স্তন দানকারী মায়েদের কলার মোচা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কেননা কলার মোচাতে রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যালাকটাগাগ। এই উপাদানটি কলার মোচা তে থাকার কারণে স্তন দানকারী মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি হয়। সেহেতু প্রত্যেক মায়ের উচিত নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে
আমরা অনেকেই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হওয়ার দরুন চিন্তিত। কেননা রক্তে যদি কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয় তাহলে সেটি রক্তের ভিতরে জমতে থাকে আর এর ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্টোক সহ বহু প্রাণঘাতী অসুখে মানুষ দিন দিন আক্রান্ত হচ্ছে।
এই সকল প্রাণঘাতী অসুখ থেকে মুক্তি পেতে পারেন যদি আপনি আপনার খাবার অভ্যাসে নিয়মিত কলার মোচা। খান কেননা কলার মোচাতে থাকে স্টেরল নামক একটি প্লান্ট কম্পাউন্ড। আর এই উপাদানটি আপনার রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
রক্তশূন্যতা দূর করতে
রক্তস্বল্পতা নামক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে আমাদেরকে অবশ্যই কলার মোচা খাওয়া দরকার। যারা রক্তশূন্যতা ভোগা রোগী তাদের জন্য কলার মোচা খুবই উপকারী। কেননা রক্তের মূল উপাদান হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এই কলার মোচা। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের এ কলার মোচা বেশি খাওয়া প্রয়োজন।
কেননা কলার মোচায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা গর্ভাবস্থা মায়েদের আয়রনের চাহিদা পূরণ করে। তাই যে সকল মায়ের গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতায় ভুগেন তারা যদি নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করেন তাহলে আশা করা যায় এই সকল সমস্যা থেকে আপনি মুক্ত থাকতে পারবেন।
চুলের উজ্জ্বলতা ফেরাতে
আমরা অনেকেই চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক উপায় অবলম্বন করে থাকি। আমরা বিভিন্ন কন্ডিশনার ব্যবহার করে থাকি কিন্তু সেগুলো সবই কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি। প্রাকৃতিক ভাবে চুলের স্বাভাবিক উজ্জলতা ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদেরকে কলার মোচা ব্যবহার করতে হবে।
বিভিন্ন হিয়ার কন্ডিশনের ক্ষেত্রে সিলিকার নামক উপাদান থাকে। যে উপাদান ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের ভলিউম বেশি মনে হয় এবং চুল সফট হয়। এই সকল কাজ আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায় করতে চান আপনাকে কলার মোচা ব্যবহার করত হবে। তাই আসুন দেরি না করে আমরা এখনই কলার মোচা চুলের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ব্যবহার করি।
আসুন আমরা কলার মোচার আরো কোন কোন রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর কিভাবে কলার মোচা ব্যবহার করলে সেসব রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায় সে সম্পর্কে জানিঃ
১। কলার মোচায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উন্মুক্ত রেডি কলের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং
জারণ ক্ষয় প্রতিহত করে।
২। কলার মোচাতে আয়রনের সঙ্গে আছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়োডিন। যা গলগন্ড বা গোয়টার রোগের বিরুদ্ধে
কাজ করে।
৩। মেনোপজ বা নির্দিষ্ট বয়স পরে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নারীদের
হার গঠন ও মজবুত করতে কলার মোচা খুবই উপকারী।
৪। কলার মোচায় রয়েছে ভিটামিন
এ যা রাতকানা রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই অকারণে দৃষ্টি শক্তি হারানো থেকে রক্ষা
পেতে হলে আমাদেরকে কলার মোচা খেতে হবে।
৫। গর্ভস্থ শিশুর প্রায় ৭০ ভাগ
মস্তিষ্কের গঠন মায়ের পেটে হয়। তাই গর্ভবতী নারীদের এবং শিশু সুস্বাস্থ্যের
জন্য নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া উচিত।
এখন কলার মোচার অপকারিতা সম্পর্কে জানা জরুরি করার মজার অবগত সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে আর্টিকেলটি সম্পর্ক করতে থাকতে হবে নিচে আমরা কলার মোচার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই পড়তে থাকুন।
কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা
কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় যে কলার মোচাতে তেমন কোনো অপকারিতা নেই বলার মত প্রচুর পুষ্টি উপাদান এবং উপকারিতা রয়েছে যা আমরা উপর থেকে জেনে এসেছি।কলার মোচা আসলেই আমাদের জন্য খুবই উপকারী একটি সবজি
এবং এটি রান্না করে খেতে খুব সুস্বাদু কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত কলার মোচা খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার সাথে কিছু সমস্যা হতে পারে কেননা অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয় যেমনঃ
- হজমের সমস্যা বাড়তে পারে
- আপনার ত্বক উস্কো এবং শুষ্ক হয়ে যেতে পারে
- এমনকি পেটে ব্যথা বা গ্যাস্ট্রিকের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে
সেহেতু আমরা এখন থেকেই চেষ্টা করব নিয়মিত পরিমান মত করার মত খাওয়ার। যাতে আমরা বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে দূরে থাকতে পারি এবং অতিরিক্ত পরিমাণে করার মোচা না খাওয়ার যাতে নতুন কোন রোগের শিকার না হতে হয়।
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানা জরুরী
গর্ভাবস্থায় কলা মোচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এমন প্রত্যেক মহিলাদের জন্য জানা জরুরী যারা গর্ভবতী। কেননা এই সময়টুকুতে প্রচুর খেয়াল রাখতে হয় মায়েদের যেহেতু তাদের পেটে একজন সন্তান বড় হচ্ছে সেহেতু সে সন্তানের সুস্থ বিকাশ ও সুস্থ রাখতে আপনাকে কলার মোচা খেতে হবে।
গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় কলা মোচা খাওয়ার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। আসুন আমরা জেনে নিই গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কলার মোচা খাওয়া কতটা উপকারী।
বুকের দুধ বৃদ্ধি করেঃ কলার মোচা গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী মায়েদের কলার মোচা খাওয়া কথা বলে থাকেন। কেননা একজন শিশুকে জন্মের পরেই খাওয়ার হিসেবে দুধ খাওয়ানো হয় সেই দুধ বৃদ্ধির জন্য কলার মোচা খাওয়া উপকারি।
ভিটামিনের অভাব পূরণ করাঃ মোচাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। এর মধ্যে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ছাড়াও আরো অনেক ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই জরুরী। তাই গর্ভকালীন সময়ে যেসব মায়েরা নিয়মিত কলার মোচা খান তাদের বাচ্চারা অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন হয় এবং তাদের পরিপূর্ণ বিকাশ হয়।
মর্নিং সিকনেস কমায়ঃ অনেক গর্ভবতী মহিলাদের দেখা যায় তারা সকালের অসুস্থতা অনুভব করে থাকেন। এ অবস্থা তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর এবং অস্বস্তিকর হয়ে থাকে। আপনি যদি কলার মোচা খান তাহলে এই অসুস্থতা এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে আপনাকে সাহায্য করবে। যা আপনাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখবে।
উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধঃ মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে থাকে কলার মোচা যেহেতু উচ্চ দ্রবণীয় ফাইবার তাই আপনি যদি একটি খান তাহলে আপনার পেটের সমস্যা যেমনঃ কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করবে এবং হজম উন্নত করবে।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেঃ অধিকাংশ গর্ভাবস্থায় কালীন মহিলাদের দেখা যায় তাদের রক্তে শর্করা মাত্র বৃদ্ধি পায়। তাই গর্ভাবস্থায় ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিয়মিত করার মতো খাবার খুবই জরুরী।
রক্তস্বল্পতা দূর করার কারণেঃ যেসব মহিলারা গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতায় ভুগে থাকেন তাদের নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া উচিত। কেননা কলার মোচাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা গর্ভাবস্থা কালীন মায়েদের আয়রনের চাহিদা পূরণ করে থাকে। এমনকি রক্তের মূল হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করাতেও করার মোচা ভূমিকা রাখে। তাই রোগীর রক্তশূন্যতা দূর করতে কলার মোচা খুব উপকারী।
শেষ কথাঃ কলার মোচার উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার মোচার পুষ্টিগুণ
প্রাণপ্রিয় পাঠক মন্ডলী!! আশা করছি আপনি যে বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন সে বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আমরা আজকে আর্টিকেলে কলার মোচার উপকারিতা ও অপকারিতা, কলার মোচার পুষ্টিগুণ, কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
এই আর্টিকেল পড়ার পর যদি আপনার কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা পুরো আর্টিকেল জুড়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। যদি আপনার কাছে এই আর্টিকেলে কোন ভুল ধরা পড়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানালে আমরা তা পরবর্তীতে সংশোধন করার চেষ্টা করবো।
আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন বলে মনে হলে এবং অন্যদেরকে উপকৃত করতে চাইলে আপনার বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের নিকট আর্টিকেলটি শেয়ার করতে পারেন যাতে তারাও কলার মোচার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে উপকৃত হতে পারে। এটাই আমাদের কাম্য।
নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url