চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার - কারি পাতার ১৭টি কার্যকরী উপকারিতা
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার ও কারি পাতার উপকারিতা এ সম্পর্কে যদি আপনি জানার জন্য এখানে এসে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক কাজ করেছেন। আমি আপনাকে কারি পাতার ১৭ টি কার্যকারী উপকারিতা জানাবো এবং চুলের যত্নে কারি পাতা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
আজকে আমরা এই আর্টিকেলে কারি পাতার উপকারিতা, চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার, কারি পাতার অপকারিতা, কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম এবং কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তাই চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
পেইজ সূচিপত্রঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার - কারি পাতার উপকারিতা
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার আসুন জেনে নিন
চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন। আজকে আমি আপনাকে চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহারের অনেকগুলো নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। যার মাধ্যমে আপনি আপনার চুলের যত্ন নিতে পারবেন এবং নিজেই দেখে নিতে পারবেন কেমন হাতেনাতে প্রমাণ পাচ্ছেন।
কারি পাতাতে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাসের মতন আরও অনেক উপাদান রয়েছে যা আপনার চুলের জন্য পুষ্টি জোগাতে খুবই উপকারী। এই উপাদানের কারণে আপনার চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং চুলের পড়াও কমিয়ে দেয়। নিচে চুলের যত্নে কারি পাতাকে কত ভাবে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।
হেয়ার মাস্ক হিসেবেঃ
হিয়ার মাস্ক হিসেবে আপনি কারি পাতাকে ব্যবহার করতে পারবে নিচে দিকনির্দেশনা দেওয়া হলো যার মাধ্যমে আপনি hair মাস্ক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেনঃ
- প্রথমে একটি পাত্রে এক মুঠো কারি পাতা নেন।
- সেই পাত্রে কারি পাতার সাথে ৩ থেকে ৪ টেবিল টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে নিন।
- এরপরে কারি পাতা এবং টক দইকে ভালোভাবে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন যাতে ঘন হয়ে যায়।
- এটি হলো আপনার হেয়ার মাস্ক এটিকে আপনি আপনার চুলে এবং চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন।
- এভাবে ৩০ মিনিট ধরে রাখুন তারপরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
হেয়ার টনিক হিসেবেঃ
আপনি হেয়ার টনিক হিসেবেও কারি পাতাকে ব্যবহার করতে পারেন। এই হেয়ার টনিক ব্যবহার করার জন্য আপনি নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। যার ফলে আপনার চুলের গোড়া আরো মজবুত হবে। নিচে এয়ার টনিক বানানোর দিকনির্দেশনা দেওয়া হলোঃ
- একটি পাত্রে নারিকেল তেল নিন এবং সেই তেলটি হালকা আছে গরম করে নিন।
- তারপরে এই পাত্রের মধ্যে এক মুঠো কারি পাতা মেশান। দেখবেন তেল গরম হওয়ার সাথে সাথে রং বদলাতে থাকবে।
- কিছুক্ষণ পরে চুলার আঁচ বন্ধ করে পাত্রটি নামিয়ে নিন এবং ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- ঠান্ডা হয়ে গেলে তারপর ছেকে নিন। এবার একটি কাঁচের স্প্রে বোতল লাগবে তার মধ্যে এই তেলটি ঢেলে ব্যবহার করতে পারবেন।
- এরপর সেই তেলটি আঙ্গুলে ঢেলে নিয়ে ভালোভাবে মাথায় মেসেজ করুন। তারপর ১ ঘন্টা রেখে দিন।
- ১ ঘন্টা রাখা হলে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল পড়া কমে যাবে। এ পদ্ধতিটি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার করুন ফল না পাওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করতে থাকবেন।
চুল বৃদ্ধিতেঃ কারি পাতাতে অনেক পরিমানে ভিটামিন সি, বি এবং প্রোটিন রয়েছে যা মাথার ত্বকে লাগালে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। আপনি যদি চুল বাড়াতে চান তাহলে আমলকি ও মেথি এর সাথে কারি পাতা কে সমপরিমাণে বেটে মাথার তালুতে লাগিয়ে রাখুন প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। তারপরে অল্প গরম পানিতে চুলটি ধুয়ে ফেলুন। এভাবে যদি আপনি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন নতুন চুল গজাবে।
আরো পড়ুনঃ কলার মোচার ১৪টি কার্যকরি উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার মোচার পুষ্টিগুণ
আগা ফাটা কমাতেঃ আপনার চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে আপনি যদি তা কমাতে চান তাহলে চুলের আঘাতে শুধু কারি পাতা বেটে লাগিয়ে দিন। দেখবেন আস্তে আস্তে ফাটা কমে যাচ্ছে।
চুল পড়া রোধেঃ যদি আপনার চুল ঘন করতে এবং চুলের গোড়া শক্ত করতে চান তাহলে ১০ থেকে ১৫ টি কারি পাতা বেটে এর সাথে পেঁয়াজের রস মিশাল এই পেস্টটি কমপক্ষে ১ ঘণ্টা মাথাতে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন দেখবেন চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
কারি পাতার অপকারিতা চলুন জেনে নিই
কারি পাতার অপকারিতা সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। আমরা অনেক কারি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এবং জানলাম চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। এখন আমাদেরকে কারি পাতার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। কারি পাতার অপকারিতা তেমন নেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি খেলে কোন অপকারিতা হবে না উপকারী হবে। তারপরও কিছু কারি পাতার অপকারিতা সম্পর্কে নিচে উল্লেখ করা হলো।
- যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কারি পাতার ব্যবহার করলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে সেক্ষেত্রে আপনাকে কারি পাতার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
- যেহেতু কারি পাতা হাইপোগ্লাইসিসেমিক বৈশিষ্ট্যের খাবার সেটির ডায়াবেটিস রোগের জন্য উপকারী। যদি কারি পাতা বেশি পরিমাণে খান তাহলে রক্তের শর্করা মাত্র সাধারণের চেয়ে কমে যেতে পারে এক্ষেত্রে ব্যক্তির ক্ষতি হতে পারে।
- সবার ত্বক একই রকম না। কারো কারো ক্ষেত্রে কারি পাতা ত্বকে পেস্ট বা তেল হিসেবে লাগালে জালাপোড়া করতেও পারে। এটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ধরা হয়।
এখান থেকে আমরা জানলাম কারি পাতার অপকারিতা গুলো ব্যক্তি ভেদে সবার জন্য নয়। আপনি নির্দ্বিধায় কারি পাতাকে খেতে পারেন। তবে যাদের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এক্ষেত্রেই ভালো হবে। বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে বেঁচে থাকা যাবে। তবে যারা সুস্থ আছেন তারা কারি পাতা খান অনেক উপকারিতা আছে এবং চুলে ব্যবহার করেন তা আশ্চর্যজনকভাবে উপকার করবে।
কারি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
কারি পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। যারা গ্রামাঞ্চলে থাকেন তারা আশপাশেই এই কারি পাতা দেখতে পাবেন। এই কারি পাতাতে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং অনেক উপকারিতা রয়েছে। কারি পাতাতে ভিটামিন সি, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং নিকোটিনিক এসিডের পরিমাণ বেশি রয়েছে।
এখানে আমি কারি পাতা ১৭টি উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো যা জানার পর আপনি কারি পাতা খেতে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠবেন। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কারি পাতার উপকারিতা গুলো।
এক নজরে কারি পাতার ১৭ টি উপকারিতাঃ
- হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
- দাঁতের যত্নে
- চোখের যত্নে
- ত্বকের যত্নে
- চুলের যত্নে
- সংক্রমণ প্রতিরোধে
- লিভারের সুস্বাস্থ্যে
- ওজন কমাতে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
- শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
- ব্যথা নাশক হিসেবে
- সকালের অসুস্থতায়
- অ্যানিমিয়ার জন্য উপকারী
- ডায়রিয়া রোগে
- হৃদ যন্ত্রের সুস্বাস্থ্যে
- ক্ষত নিরাময়ে
হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই বদহজম জনিত সমস্যায় জর্জরিত। যদি আপনি আপনার হজম শক্তি বাড়াতে চান তাহলে কারি পাতা খেতে পারেন। কারি পাতাতে ল্যাক্সেটিভ প্রোপারটিজ রয়েছে যা আপনার হজম ক্ষমতার উন্নতি করবে। শুধু তাই নয় সাথে সাথে আপনার শরীরের ক্ষতিকার উপাদানগুলোকেও বের করে দিবে। যার ফলে আপনি বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ আপনার শরীরকে বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে দূরে রাখতে হলে শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বাড়াতে হবে। কারি পাতাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তাই আপনি যদি কারি পাতা খান তাহলে আপনার শরীরের এন্টি অক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পাবে এবং সাথে সাথে আপনি বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে পারবেন।
দাঁতের যত্নেঃ দাঁতের বিভিন্ন যত্নে যেমনঃ ক্ষত দূর করা, দাঁত থেকে ব্যাকটেরিয়া দূর করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আপনি কারি পাতায় ব্যবহার করতে পারেন। এই পাতাকে অনেক টুথপেস্টেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ উলট কম্বল গাছের ৬টি অজানা উপকারিতা - ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম
চোখের যত্নেঃ আপনার যদি দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার সমস্যা থাকে এবং চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে চান তাহলে কারিপাতা খুবই উপকারী। কারি পাতাতে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন এ এবং আরো নানারকম মিনারেল এবং ভিটামিন রয়েছে
যা আপনার চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। পাশাপাশি আপনি যদি চোখের উন্নতি করতে চান তাহলে পরিমাণ মতো কারি পাতা চোখের উপরে চোখ বন্ধ অবস্থায় রাখবেন। এভাবে প্রতিদিন ১০ মিনিট করে রাখলে দেখবেন হাতেনাতে ফল পাওয়া যাচ্ছে।
ত্বকের যত্নেঃ আপনি যদি আপনার ত্বকের যত্ন নিতে চান তাহলে এক্ষেত্রে কারি পাতা সহযোগী হতে পারে। কারি পাতাতে রয়েছে শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, আন্টি ফাঙ্গাস প্রপার্টিজ যেগুলো আপনার ত্বকের বিভিন্ন ইনফেকশন থেকে মুক্ত রাখে।
চুলের যত্নেঃ চুলের যত্নেও কারি পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি শুধু ত্বকের ক্ষেত্রে নয় চুলের বৃদ্ধিতে এবং চুলের হেয়ার প্যাক হিসেবেও কারিপাতা ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে।সংক্রমণ প্রতিরোধেঃ যেহেতু কারি পাতাতে এন্টিবায়োটিক এবং এন্টিফাঙ্গাল প্রোপার্টিজ রয়েছে যার ফলে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের প্রভাব থেকে আপনার শরীরমুক্ত থাকবে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ জাতীয় রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন এই কারি পাতা ব্যবহারের ফলে।
লিভারের সুস্বাস্থ্যেঃ লিভারের সুস্বাস্থ্য যদি চেয়ে থাকেন লিভারকে ক্ষতিকারক টক্সিনের হাত থেকে মুক্ত রাখতে চান তাহলে কারি পাতা খান। কারি পাতাকে আপনি রস করেও খেতে পারেন। কারি পাতার রসে এক চামচ ঘি, অল্প পরিমাণে চিনি এবং গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকেও মুক্ত থাকতে পারবেন।
ওজন কমাতেঃ এনসিবিআই ওয়েবসাইটে পাওয়া গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কারি পাতাতে ডাইক্লোরো মেথিন, ইথাইল এসিটেট এবং মহানিম্বিনের মত উপাদান রয়েছে যা আপনার ওজন কমাতে এবং ট্রাই গ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখে।
তাই ধারণা করা যাচ্ছে ওজন কমানোর জন্য কারি পাতা ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। তবে যদি আপনি সত্যি ওজন কমাতে চান তাহলে এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং আরো অন্যান্য কাজ করলে আপনি ওজন কমাতে পারবেন বলে আশা করা যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ কারি পাতা হাইপোগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট খাদ্য যা আপনার শরীরের চিনি মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই বলা যায় যারা ডায়াবেটিস রোগী রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে কারি পাতা একটি আদর্শ খাবার হতে পারে।
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেঃ আমাদের শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কারি পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারি পাতা প্রতিদিন খেলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নির্দিষ্ট লেভেলে থাকে। এমনকি কারি পাতাতে থাকা ফাইবার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
ব্যথা নাশক হিসেবেঃ শরীরের বিভিন্ন ব্যাথা নাশক হিসেবে এমনকি ফোলা জনিত সমস্যা থেকেও উপশমের জন্য কারি পাতা ব্যবহার করা যায়। বিভিন্ন গবেষণায় আয়ুর্বেদিক ওষুধে কারি পাতার ব্যবহার উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
সকালের অসুস্থতায়ঃ গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকের প্রায় সকালের অসুস্থতা দেখা দেয় যেমনঃ বমি বমি ভাব হওয়া এরকম লক্ষণ প্রকাশ পায়। এক্ষেত্রে কারি পাতা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে চিনির সাথে কারি পাতা এবং লেবুর রসের মিশ্রণ সকালের অসুস্থতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
অ্যানিমিয়ার জন্য উপকারীঃ আপনি যদি অ্যানিমিয়ার মতো রোগে রোগী হয়ে থাকেন তাহলে কারি পাতা খান। কেননা কারি পাতাতে ফলিক এবং আয়রন এত পরিমাণে রয়েছে যা শরীরের প্রবেশ করলে আপনার লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে অ্যানিমিয়ার মতো রোগ পালিয়ে যাই। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে প্রতিদিন সকালে খেজুরের সঙ্গে দুটি করে কারিপাতা খেতে পারেন তাহলে উপকার পাবেন আশা করা যায়।
ডায়রিয়া রোগেঃ আপনি যদি পেট খারাপের আশঙ্কা করে থাকেন এবং ডায়রিয়ার রোগে আক্রান্ত থাকে তাহলে কারিপাতা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারি পাতার ভিতরে কার্বেজল অ্যালকালয়েড নামক উপাদান রয়েছে যা আপনার পেটের রোগ থেকে মুক্তি দিবে।
হৃদ যন্ত্রের সুস্বাস্থ্যেঃ গবেষণায় দেখা গিয়েছে কারি পাতা শরীরে প্রবেশ করলে শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় সাথে সাথে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্র বৃদ্ধি পায়। যার ফলে আপনারা হার্টের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং হৃদযন্ত্র কে সুস্থ রাখা যায়।
ক্ষত নিরাময়েঃ আপনি যদি কোন জায়গায় ব্যথা পেয়ে থাকেন বা অল্প পোড়া জাতীয় কোন কিছু থাকে তাহলে কারি পাতা এক্ষেত্রে উপকারী। কারি পাতাতে আছে অ্যালকালয়েড যা অ্যান্টিসেপটিক এর মত কাজ করে। আপনি যদি কোন আঘাত বা জখমে কারি পাতা বেটে সেই জায়গাতে দেন তাহলে এটি সহজেই সেরে ওঠে।
আমরা এ পর্যন্ত কারি পাতার অনেক উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা কারি পাতার অপকারিতা সম্পর্কে জানবো। নিচে আমরা কারিপাতার অপকারী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম - কারি পাতার ব্যবহার
কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম এবং কারি পাতার ব্যবহার দুটো একই জিনিস। খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে যদি বলতে হয় তাহলে বলা যাবে কারি পাতাকে আপনি বিভিন্ন তরকারিতে খেতে পারেন এবং বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করতে পারেন যেমনঃ ত্বকে এবং চুলে। কারি পাতা কে আপনি চাইলে বিভিন্ন শাকসবজি ডাল ভাতের সাথে রান্না করে মসলা দিয়ে ভালোভাবে খেতে পারেন।
আবার যদি চান তাহলে চাটনির সাথে কারি পাতা খেতে পারেন। আবার অনেকে ভাজা কারিপাতা খাবারের সাথে খেয়ে থাকে। আবার বিভিন্ন রোগের উপশমে কারি পাতার জুস অনেকে খেয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে আমার মনে হয় অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাছাড়া আপনি কারি পাতা কে চুলের যত্ন ব্যবহার করতে পারেন।
বিভিন্ন হেয়ার টনিক হিসেবে, হেয়ার মাস্ক হিসেবে, নারিকেল তেলের সাথে, আমলকির সাথে, মেথির সাথে বিভিন্ন ভাবে কারি পাতাকে চুলের জন্য উপকারী করে তুলতে পারেন। আবার আপনি চাইলে ত্বকের জন্য কারি পাতা ব্যবহার করতে পারেন যেমনঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য কারি পাতাকে পেস্ট বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
আবার কারি পাতাকে জলে সিদ্ধ করে গোসলের সময় পানিতে এই জল মিশিয়ে গোসল করতে পারেন। তাতে আপনার ত্বক সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন। তাহলে বলা যায় কারি পাতাকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায় এবং বিভিন্ন খাবারের সাথে খাওয়া যায়।
এমনকি কারে পাতাকে আপনি চা হিসেবে খেতে পারেন। এটি খেলে অনেক উপকার হবে তাই যারা চান আপনার শরীরে বিভিন্ন উপকার হোক বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত থাকুক তাহলে কারিপাতা ব্যবহার শুরু করুন।
শেষ কথাঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার - কারি পাতার উপকারিতা
প্রাণপ্রিয় পাঠক মন্ডলী!! আশা করছি আপনি যে বিষয় সম্পর্কে জানতে এসেছিলেন তা জানতে পেরেছেন। আমরা আজকে আর্টিকেলে কারি পাতার উপকারিতা, চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার, কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম এবং কারি পাতার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
এই আর্টিকেল পড়ার পর যদি আপনার মনে কোন প্রশ্ন বা মতামত থেকে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাতে পারেন আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা পুরো আর্টিকেল জুড়্রে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। যদি এই আর্টিকেলে কোন ভুল ধরা পড়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাবেন আমরা পরবর্তীতে তার সংশোধন করার চেষ্টা করবো।
এই আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হয়েছেন বলে মনে করে থাকলে এবং অন্যদেরকেও উপকৃত করতে চাইলে এই আর্টিকেলটি বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করতে পারেন যাতে তারাও কারি পাতার উপকারিতা জেনে এবং ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারে। এটাই আমাদের কাম্য।
নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url