ভাতের মাড়ের ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতা- ভাতের মাড়ের রূপচর্চা
ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ভাতের মাড়ের রূপচর্চা সম্পর্কে যদি জানার জন্য এই পোস্টে এসে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক কাজ করেছেন। আমি এখানে আপনাকে ভাতের মাড়ের ১২টি উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো এবং ভাতের মাড়ের রূপচর্চা সম্পর্কে জানাবো। কিভাবে আপনি ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন ভাতের মাড় দিয়ে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। আজকে আমরা এখানে ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে ভাতের মাড়ের রূপচর্চা নিয়ে এবং ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় ও ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক ইত্যাদি আরো ভাতের মাড় সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাই চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
পেইজ সূচিপত্রঃ ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা- ভাতের মাড়ের রূপচর্চা
- ভাতের মাড়ে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে জানুন
- ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত এখানে দেখুন
- ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক কি কি দেখুন
- ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের উপকারিতা- ভাতের মাড়ের রূপচর্চা কিভাবে করতে হয় দেখুন
- ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়
- শেষ কথাঃ ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা- ভাতের মাড়ের রূপচর্চা
ভাতের মাড়ে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে জানুন
ভাতের মাড় আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমরা যারা গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করে থাকি, যারা মাটির চুলায় রান্না করি তাদের ক্ষেত্রে ভাতের মাড় খাওয়া সম্ভব হলেও বিশেষ করে যারা শহর অঞ্চলে বসবাস করে কারেন্টের চুলা বা গ্যাসের চুলাতে রান্না করে তাদের ক্ষেত্রে ভাতের মাড় খাওয়া অসম্ভব। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা ভাতের মাড় খাওয়ার কত উপকারিতা রয়েছে।
এমনকি এটাও বলা হয় যে ভাতের মাড়ে ভাতের সকল পুষ্টিগুনের প্রায় বেশির ভাগই চলে যায়। তাই যদি আসল ও মূল পুষ্টি পেতে চান তাহলে ভাতের মাড় খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। বিশেষ করে যারা গ্রাম অঞ্চলে আছেন তাদের ক্ষেত্রে এটা অনেকটাই সহজ।
তাহলে চলুন আমরা দেখে আসি ভাতের মাড়ে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ভাতের মাড়ে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমনঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান। নিচে ভাতের মাড়ের কিছু পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ উল্লেখ করা হলোঃ
- ক্যালোরি= ২১৬% {প্রতি ১০০ গ্রামে}
- আমিষ= ১৫%
- শর্করা=১০%
- আয়রন= ৫%
- ফসফরাস= ১৬%
- আয়োডিন= ৪০%
- নায়াসিন= ২৩%
- ক্যালসিয়াম= ৫০%
এছাড়াও চীনা বিজ্ঞানী মি.লিন ফেলে দেওয়া ভাতের মাড় নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন যে, ভাতের মাড়ে ক্যালসিয়াম, কপার, লোহ, জিংক, মেঙ্গানিজ, মেলেনিয়াম নামক আরো ৬টি উপাদান রয়েছে এবং তিনি আরো গবেষণা করে দেখেছেন যে, ভাতের মাড়ে মেলেনিয়াম রয়েছে ২ গুণ, ক্যালসিয়াম রয়েছে ৪ গুণ, কপার ৬ গুণ এমনকি ম্যাঙ্গানিজ ৮ গুণ আর লৌহ ১০ গুণ রয়েছে। এছাড়াও টোকো ট্রাইনল এবং আরো অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে এই ভাতের মাড়ে।
ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত এখানে দেখুন
ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার সময় আমাদের মাথায় আসে ভাতের মাড়ে পুষ্টি কি আছে যে আমাদের এত উপকার করে। আমরা এই পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে উপরে আলোচনা করেছি আপনি চাইলে দেখতে পারেন। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ভাতের মানে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
ভাতের মাড় অত্যন্ত পুষ্টি মান সম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যকর ভাতের মাড় আমাদের শরীরের ব্যাপক উপকার করে। আমরা ভাবতেও পারি না যে আমরা ভাতের মাড় ফেলে দিই, গরু ছাগলকে খাইয়ে দিই। কিন্তু নিজেরা খায় না এর ফলে আমরা কত পুষ্টিগুন থেকে দূরে থাকি এবং অনেক রোগ বালাই থেকে মুক্তকারী ঔষধ অবহেলাই নষ্ট করি। এখানে ১২টি উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে তাই চলুন জেনে আসি কি কি উপকার রয়েছে।
এক নজরে ভাতের মাড়ের ১২টি উপকারিতাঃ
- ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি দেয়
- ত্বকের উজ্জ্বলতায়
- শক্তি বৃদ্ধি
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
- ভিটামিন ও খনিজের উৎস
- স্টার্চের উৎস
- বাচ্চাদের হেলদি ড্রিংকস
- মৌসুমী রোগে
- ডায়রিয়া প্রতিরোধে
- চুলের যত্নে
- ক্লান্তি দূর করতে
ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি দেয়ঃ ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে ভাতের মাড় আপনাকে সাহায্য করতে পারে। গ্রীষ্মকাল এর সময় অনেকে ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় পড়ে থাকেন। গ্রীষ্মকালে যেহেতু অতিরিক্ত গরমের কারণে শরীর থেকে তরল পদার্থ বেরিয়ে যায় তখন আপনার শরীরে পানির অভাবে ডিহাইড্রোসনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনি যদি ভাতের ফ্যান খান তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতায়ঃ ত্বকের উজ্জ্বলতায় ভাতের মাড় বেশ কার্যকরী। ভাতের মাড়কে প্রাকৃতিক টোনার ও বলা হয়ে থাকে। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যদি আপনি প্রতিদিন মুখে ভাতের মাড় লাগিয়ে মেসেজ করেন তাহলে ত্বকের বিভিন্ন ছিদ্র ছোট হয়ে যায়, সেসঙ্গে স্কিনের উপরে জমে থাকা মৃত কোষের আবরণ দূর হয়ে যায়।
তাই আপনার যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা জনিত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে রাতে শোয়ার আগে তুলোর সাহায্যে ভাতের মাড় সারা মুখে মেখে নিবেন। তারপরে সারারাত রেখে দিয়ে সকালে উঠে মুখটা ধুয়ে নিবেন। দেখবেন আপনার ত্বক আগের চেয়ে উজ্জ্বল হয়ে যাবে ধীরে ধীরে। এমনটা নিয়মিত চালিয়ে যেতে থাকবে হবে।
শক্তি বৃদ্ধিঃ ভাতের মাড় কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ। তাই আপনি শক্তি হীনতায় ভুগে থাকেন তাৎক্ষণিক শক্তির প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে ভাতের মাড় এক্ষেত্রে দুর্দান্ত কাজ করে থাকে। কেননা ভাতের মাড়ে থাকা ভিটামিন বি আপনার ক্লান্তি দূর করতে এবং শরীরের শক্তি সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যেহেতু ভাতের মাড়ে গ্লুকোজ রয়েছে তা শরীরে দ্রুত সুস্থিত হয় এবং তাৎক্ষণিক শক্তির যোগান দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ ভাতের মাড় ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও আপনার পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি সাধিত করে আপনার হজম শক্তির উন্নতি ঘটায়। পাশাপাশি এটি আপনার শরীরে ভালো ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় করে যাতে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যদি আপনি নিয়মিত ২গ্লাস করে ভাতের মাড় খান তাহলে আপনার বাওয়েল মুভমেন্ট উন্নতি ঘটবে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোষ্ঠকাঠিন্যের উপশম ঘটে যাবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ আপনাদের মধ্যে যারা উচ্চ রক্তচাপ নামক সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে ভাতের মাড় খুবই উপকারী। কেননা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য সোডিয়াম কম যেসব খাবারে থাকে সেসব খাবার বেশ উপকারী। যেহেতু ভাতের মারে সোডিয়াম কম পরিমাণে থাকে সেহেতু বলা যায় ভাতের মাড় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ভিটামিন ও খনিজের উৎসঃ ভাতের মাড়ে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। এটি একটি ভালো উৎস খনিজ পদার্থের। ভাতের মাড়ে ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে। ম্যাগনেসিয়াম আপনার হাড় ও পেশির স্বাস্থ্যের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাঙ্গানিজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি শরীরের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।
স্টার্চ এর উৎসঃ ভাতের মাড় জটিল কার্বোহাইড্রেট এর একটি ভালো উৎস। ভাতের মাড়ে থাকা স্টার্চ আপনার শরিরে ধীরে ধীরে শোষিত হয়। যার ফলে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে থাকে। আর এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আবার খুবই ভালো।
বাচ্চাদের হেলদি ড্রিংকসঃ যেহেতু ভাতের মাড়ে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং অনেক উপকার রয়েছে সেহেতু আপনি চাইলে আপনার বাচ্চাকে ভাতের মাড়কে হেলদি ড্রিংস হিসেবে খাওয়াতে পারেন। এটি বাচ্চার জন্য খুবই উপকার বলে সাব্যস্ত হবে আশা করা যায়।
মৌসুমী রোগেঃ ভাতের মাড়ে এত পুষ্টি উপাদান রয়েছে যে আপনি যদি নিয়মিত ভাতের মাড় খান তাহলে আপনি বিভিন্ন মৌসুমী রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন যেমনঃ বিভিন্ন মৌসুমী রোগ হয়ে থাকে ক্রমাগতভাবে সবারই সর্দি জ্বর, কাশির সমস্যা ইত্যাদি আপনি যদি এই সকল কমন রোগ থেকে বেঁচে থাকতে চান তাহলে নিয়মিত ভাতের ফ্যান খান আশা করা যায় আপনি বেঁচে থাকবেন।
ডায়রিয়া প্রতিরোধেঃ আপনার কি পানির মতন পায়খানা হয় এবং অনেক সমস্যায় ভুগছেন ডায়রিয়া কোনমতেই ভালো হচ্ছে না। তাহলে পাতলা ভাতের মাড় খান। অল্প লবণ দিয়ে মিশিয়ে খান এটি আপনার খুবই উপকার করবে ।
আবার ভাতের মাড়ত হজমের জন্য খুবই উপকারী। সেহেতু এটি হজম করতে কোন সমস্যা হয়ে থাকে না। ভাতের মাড়ে থাকা আশ পানি শূন্যতা রোধ করে এবং আপনার অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে।
চুলের যত্নেঃ আপনার চুলের যদি আগা ফেটে যেয়ে থাকে, চুলের উজ্জ্বলতা কমে থাকে এবং চুলের উজ্জলতা বাড়াতে চান। তাহলে ভাতের মাড় গোসল করার আগে কন্ডিশন হিসেবে চুলের মাখুন তাহলে আপনার চুলের গোড়ায় পুষ্টির অভাব হবে না এবং চুল পড়া সহ একাধিক স্কাল্প সম্পর্কিত রোগের প্রকোপ থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন।
ক্লান্তি দূর করতেঃ ভাতের মাড় খেলে শরীরে ৮ প্রকারের অ্যামাইনো এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে আপনার এক্সারসাইজের সময় পেশির গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করতে এবং এনার্জীর ঘাটতি পূরণ করতে ভাতের মাড় খেতে পারেন। কেননা ভাতের মারে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা আপনার শরীরকে আরাম দিবে এবং বিভিন্ন ক্লান্তি থেকে দূরে রাখবে।
ভাতের মাড়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে অপকারিতা খুবই কম রয়েছে সে তুলনায়। তবে সকল খাদ্যের মতন ভাতের মারার কিছু আপকারিতা রয়েছে। এই সকল অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আমরা নিচে করেছি জানতে হলে পড়তে থাকুন।
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক কি কি দেখুন
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক খুবই কম রয়েছে। তারপরও আমরা এখানে ভাতের মাড়ের অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
নিচে ক্ষতিকর দিক গুলি দেওয়া হলোঃ
- ধান জৈব আর্সেনিক শোষণ করে। এর ফলে ধান থেকে উৎপন্ন ভাতেও আর্সেনিক থাকে এবং ভাতের মাড়েও আর্সেনিকের উপস্থিত থাকতে পারে। সেহেতু দীর্ঘস্থায় আর্সেনিক বিষয় বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় আপনি আক্রান্ত হয়েছে কিনা সেটা বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ রয়েছে যেমনঃ ত্বকের রং পরিবর্তন হওয়া, ডায়রিয়া হওয়া, বমি বমি ভাব হওয়া, হাত পা অবশ হয়ে যাওয়া, পেটব্যথা হওয়া, অসুস্থতা, ক্যান্সার হওয়া ইত্যাদি।
- ভাতের মাড় যেহেতু উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাবার এবং ভাতের মাড় রক্তে শর্করা মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেহেতু যেসব ডাইবেটিস রোগী রয়েছে তাদের জন্য ভাতের মাড় একটি সমস্যা হতে পারে।
- ভাতের মাড় খেলে আপনার এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেটা তাদের জন্য যাদের এলার্জির সমস্যা থাকে।
- অতিরিক্ত ভাতের মাড় খেলে আপনার পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
- ওজন বৃদ্ধি হতেও পারে। ভাতের মারে যেহেতু ক্যালোরি পরিমাণ বেশি থাকে সেহেতু যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে খান তাহলে এটি আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।
তাই বলা যায় কম খেলে ভাতের মাড় তেমন কোন সমস্যা হবে না। তবে যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে খান তাহলে এটি আপনার সমস্যা করতে পারে। তাই ভাতের মাড় নিয়মিত খান এবং বিভিন্ন উপকারিতা পান কিন্তু অতিরিক্ত খাবেন না।
ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের উপকারিতা- ভাতের মাড়ের রূপচর্চা কিভাবে করতে হয় দেখুন
ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের উপকারিতাই বলেন আর ভাতের মাড়ের রূপচর্চা সম্পর্কে বলেন না কেন দুটোই একই জিনিস। ভাতের মাড় আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। আমরা আপনি নিজেদের ত্বককে প্রচুর গুরুত্ব দিয়ে থাকি বিশেষ করে মেয়েরা। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে হলে ভাতের মাড় খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
নিচে ত্বকের উপকারের জন্য ভাতের মাড় কিভাবে কাজ করে, কিভাবে ব্যবহার করলে ত্বকের উপকার পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- যদি আপনি ভাতের মাড়কে গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে নেন এবং দিনে অন্তত ২বার গোসল করেন সেই পানিতে। তাহলে আপনার ত্বকের অস্বস্তিকর জ্বালা ভাব, চুলকানি, র্যাশ থেকে আপনি সহজে মুক্তি পেতে পারেন।
- আপনার যদি ব্রণের সমস্যা থেকে থাকে এবং অনেক দুশ্চিন্তায় থাকেন। ব্রণের সমস্যা কমছে না উল্টো প্রতিদিন বাড়ছে তাহলে দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ বার ভাতের মাড় ঠান্ডা করে সেই মাড় টুকু ত্বকের ব্রণ আক্রান্ত অংশে লাগান। এইভাবে যদি আপনি করতে পারেন তাহলে সমস্যা দ্রুতই সেরে যাবে।
- ভাতের মাড় আপনার ত্বকের জন্য সানস্ক্রিম হিসেবে কাজ করে। ভাতের মাড় ঠান্ডা করে তুলে যদি আপনি মুখ বা হাত-পায়ের রোদে পড়া অংশে নিয়মিত মাখেন তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা দেখবেন অনেক বেড়ে গেছে। এ পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে পারলে আপনার ত্বকের আদ্রতা টিকে থাকবে। এছাড়াও ত্বকের হাইপার পিগমেন্টেশন আর ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া ঠেকাতে ভাতের মার আপনাকে সাহায্য করবে।
- ভাতের মাড়কে আপনি ফেসওয়াশের কাজ করাতে পারবেন। ৪ চামচ ভাতের ফ্যান নিবেন, ১ চামচ এ্যালোভেরা জেল নিবেন। তারপর এই ২টি রিঠার পানির সঙ্গে মিশিয়ে একটা স্প্রে বোতলে ভরে নেবেন। তারপর সেই বোতলটি ফ্রিজে রাখবেন। সারাদিনে দুই থেকে তিনবার এটি মুখে দিবেন তারপর ধুয়ে ফেলবেন। দেখবেন এটি খুব ভালো ফেসওয়াশের মতন কাজ করছে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান? ত্বক খসখসে হয়ে গেছে? কোমল বানাতে চান। তাহলে ২ চামচ ভাতের ফ্যানের সঙ্গে ১ চামচ মধু ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর সেটা সারা মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর আধাঘন্টা আপনার মুখে রাখুন সেই পেস্টি। তারপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে গেছে।
ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়
ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় এ সম্পর্কে অনেকেই এখন গুগলের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করছে। আসলে কি ভাতের মাড় খেলে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। আবার অনেকে চিন্তা করছে আমি আবার বেশি মোটা হয়ে যাব না তো। এ সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি। ভাতের মাড়ে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমনঃ
ভিটামিন রয়েছে, ক্যালসিয়াম রয়েছে, জিংক রয়েছে, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, এমনকি ভাতের মাড় আপনার শরীরের অনেক উপকার করে। চুলের উপকার করে, ত্বকের উজ্জ্বলতায় উপকার, ভাতের মাড়ের উপকারের কোন শেষ নেই। ভাতের মাড়ে শর্করা প্রচুর বৃদ্ধি করে এর ফলে আপনার ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
তাই বেশি পরিমাণে যদি ভাতার মাড় খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ১দিন বা ২দিন খেলে সেটাও তেমন প্রভাব ফেলবে না। তাই যারা ওজন বাড়ার চিন্তায় আছেন। তাদের জন্য এটা কোন সমস্যা না। আপনি নিয়মিত অল্প পরিমাণে খাবেন তাহলেই সেটা ঠিক থাকবে।
আর যারা চাচ্ছেন যে আপনার ওজন বৃদ্ধি হোক তাহলে আপনি নিয়মিত বেশি পরিমাণে ভাতের মাড় খাবেন। তাহলে দেখবেন আপনি শরিরে শক্তি ফিরে পাচ্ছেন। কেননা এতে কার্বোহাইড্রেট এর ভালো উৎস রয়েছে। ভাতের মাড় বেশি করে খেলে শরীরে ক্লান্তি ভাব দূর হবে, এনার্জি ফিরে পাবেন এবং ওজন ও বাড়বে।
শেষ কথাঃ ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা- ভাতের মাড়ের রূপচর্চা
প্রাণ প্রিয় পাঠক মন্ডলী!! আপনারা যে বিষয় সম্পর্কে জানতে এসেছিলেন আশা করি সে বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই পুরো পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা এখানে ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে, ভাতের মাড়ের রূপচর্চা নিয়ে, ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় এ বিষয় নিয়ে এবং ভাতের মাড়ের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
এই আর্টিকেল পড়ার পর যদি আপনার কোন মতামত বা প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আপনি আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা এ আর্টিকেলে সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যদি আমাদের আর্টিকেলে কোন ভুল ধরা পড়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাবেন। আমরা তা পরবর্তীতে সংশোধন করার চেষ্টা করব।
যদি আর্টিকেলটি পড়ার পর উপকৃত হয়েছেন বলে মনে করে থাকেন এবং অন্যদেরকে উপকৃত করতে চান তাহলে আপনি আপনার বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের নিকট শেয়ার করতে পারেন যাতে তারাও ভাতের মাড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে উপকৃত হতে পারে। এটাই আমাদের কাম্য।
নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url