গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয় - গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়? কোন সমস্যা হয় কিনা। নাকি কোন উপকার হয়। এইসব বিষয়ে আপনি জানতে চাচ্ছেন তাই না। হ্যাঁ, আপনি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে ভালোভাবে জানতে পারবেন। গর্ভাবস্থা মহিলাদের জন্য একটি খুবই আনন্দের সময় হয়ে থাকে এই অবস্থায় পুষ্টিকর খাবার ও ফলমূল খাওয়া খুবই জরুরী।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়? এর উপকারিতা, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সহ গর্ভাবস্থাকালীন বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আসুন দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
পেইজ সুচিপত্রঃ
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর ফল হিসেবে তরমুজ খুবই দরকারি একটি ফল। আপনি গর্ব অবস্থায় তরমুজ পরিমিতভাবে খেতে পারেন। এটি কেবল নিরাপদ বিষয়টি তা নয় এটি এমন কি গর্ভবতী মহিলা ও তার শিশুর জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। কেননা তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পানি ও প্রোটিন এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা গর্ভ অবস্থায় শিশু ও মায়ের জন্য খুবই উপকারী।
তাই আপনি গর্ভাবস্থায় একটি দরকারি ফল হিসেবে তরমুজ খেতে পারেন যা আপনার ও আপনার শিশুর জন্য খুবই উপকারী হবে।
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থা কালীন সময় মহিলাদের পুষ্টিকর খাদ্য ও ফলমূলের ডায়েট এর দিকে গভীর দৃষ্টি রাখা উচিত। এই সময় আপনার বাচ্চার বেড়ে ওঠা ও গঠনের ক্ষেত্রে যে সকল ফলমূল বিশেষভাবে উপকারী সেসব ফলমূল খেতে হবে। সে হিসেবে আপনি গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেতে পারেন যা আপনার ও আপনার শিশুর জন্য অনেক রোগ থেকে মুক্তি ও উপকারিতার কারণ হবে। নিচে গর্ভাবস্থায়ী মহিলাদের জন্য তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে উল্লেখ করা হলোঃ
ডিহাইড্রেশনের বিরুদ্ধে
গর্ভকালীন সময়ে ডিহাইড্রেশন বা পানির অভাব একটি সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তরমুজ আপনাকে সাহায্য করতে পারে। নিচে তরমুজ কি উপকারের মাধ্যমে আপনাকে ডিহাইড্রেশনের বিরুদ্ধে সাহায্য করতে পারে তা দেওয়া হলঃ
- প্রচুর পরিমাণে পানিঃ তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি যা প্রায় ৯২%। এই পানি শরীরকে ডিহাইড্রেশনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।
- ইলেক্ট্রোলাইট এর ব্যালেন্সঃ শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখাতে তরমুজ খুবই জরুরী। কেননা তরমুজে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম এর মত ইলেকট্রোলাইটস থাকে যা শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে।
- ডায়ুরেটিক প্রভাবঃ তরমুজ আপনার শরীরের মূত্র উৎপাদন বাড়ায় এবং শরীর থেকে জল নিষ্কাশন করে যার ফলে আপনার শরীরকে ডিহাইড্রেশনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এসব কিছু করতে পারে একটি কারণে সেটি হল তরমুজের ডায়ুরেটিক প্রভাব রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ কলার মোচার উপকারিতা ও অপকারিতা
মর্নিং সিকনেস নিয়ন্ত্রণে
গর্ভাবস্থা কালীন মর্নিং সিকনেস নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরী। এটি নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে তরমুজ খাওয়া বেশ উপকারী হতে পারে। নিচে কিভাবে উপকার করতে পারে মর্নিং সিকনেস দূরীকরণে তা দেওয়া হলঃ
- ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধঃ তরমুজ আপনার শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। কেননা তরমুজে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। এমনকি তরমুজ সকালের অসুস্থতা কমাতে সাহায্য করে।
- জলের পরিমাণ বেশিঃ তরমুজের বেশিরভাগ পানি দ্বারা তৈরি। প্রায় ৯০% পানি রয়েছে তরমুজে। এর ফলে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে এবং সকালের অসুস্থতার সময় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
- প্রাকৃতিক শর্করাঃ তরমুজ সকালের অসুস্থতার সময় দ্রুত শক্তি প্রদান করে। এর কারণ তরমুজে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা।
- ফাইবার সমৃদ্ধঃ হজম প্রক্রিয়া কে সহায়তা করতে এবং সকলের সুস্থতা কমাতে তরমুজ খুবই জরুরী কেননা তরমুজ রয়েছে ফাইবার।
ফোলা রোধে
গর্ভাবস্থায় কালীন সময়ে ফোলা হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। এই ফোলা হওয়া সাধারণত হাত ও পায়ে জল জমে গিয়ে হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আপনাকে তরমুজ খেতে হবে। নিচে এর উপকারিতা গুলো দেয়া হলোঃ
- পটাশিয়ামঃ তরমুজে পটাশিয়াম নামক উপাদান থাকায় শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ বের করতে এবং ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- হাইড্রেশনঃ শরীরে জল জমার প্রবণতা কমায় তরমুজ। কেননা শরীর হাইড্রেটেড রাখতে পানির প্রয়োজন হয় এবং সেই পানি তরমুজে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
- ডায়ুরেটিক প্রভাবঃ মূত্র উৎপাদন বাড়াতে শরীর থেকে জল নিষ্কাশন তরমুজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর কারণ তরমুজের ডায়ুরেটিক প্রভাব রয়েছে।
বুক জ্বালার উপশমে
গর্ভাবস্থা কালীন অনেকেরই বুক জ্বালার সমস্যায় মুখোমুখি হতে হয় এই বুক জ্বলার সমস্যার সমাধান করতে পারে তরমুজ। নিচে তরমুজের উপকারিতা দেওয়া হলঃ
- ভিটামিন সিঃ শরীরের পচন প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে এবং পেটের অম্লতা কমাতেও সাহায্য করে তরমুজ। কেননা তরমুজে রয়েছে ভিটামিন সি নামক উপাদান।
- ফাইবারঃ তন্ত্রের কাজ সহজ করতে ও অম্বল কমাতে ফাইবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ, তরমুজে ফাইবার নামক উপাদান রয়েছে
- হাইড্রেশনঃ তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি প্রায় ৯২% পানি রয়েছে। যা আপনার অম্বল বুক জ্বালা সমস্যা কমাতে সাহায্য করে সাথে সাথে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী একটি শরীরের জন্য। কেননা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে আপনার শরীরে বিভিন্ন রোগবালায় আক্রমণ করতে পারে। সেজন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আপনাকে তরমুজ সাহায্য করতে পারে। তরমুজে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার নাম লাইকোপিন এবং এটি অনাক্রমতা বা ইমিউন সিস্টেমের স্তরকে বাড়াতে সাহায্য করে। কেননা তরমুজের প্রচুর পরিমাণে পানি সাথে সাথে তরমুজ আপনার ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে।
পেশীর খিচ লাগা
গর্ভাবস্থা কালীন সময়ে বেশি লাগা একটি সাধারণ সমস্যা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তরমুজ আপনাকে সাহায্য করতে পারে। কেননা তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং ম্যাগনেসিয়াম যা পেশি খিচ লাগা প্রতিরোধ এবং উপশমে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম পেশি সংকোচনতার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। যা পেশের খিচ লাগা কমাতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ঢেঁড়সের উপকারিতা ও অপকারিতা
তবে গর্ভকালীন সময়ে পেশীর খিচ লাগা বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমনঃ ডিহাইড্রেশন, অতিরিক্ত ওজন বহন, ইলেকট্রোলাইট অসামঞ্জস্য ইত্যাদি সেজন্য এসব রোগ থাকে বাঁচার জন্য আপনাকে তরমুজ খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সঠিক পুষ্টি জাতীয় খাদ্য খাওয়া খুবই জরুরী।
দেহকে ডিটক্সাইফাই করা
দেহকে ডিটক্সিফাই করার জন্য তরমুজ গর্ভকালীন সময়ে খুবই উপকারী। কেননা তরমুজের মধ্যে রয়েছে মুত্র-বর্ধক কিছু বৈশিষ্ট্য যা আপনার শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং দেহে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমিয়ে ফেলে। এমনকি তরমুজ আপনার শরীরের লিভার এবং কিডনির সঠিক কার্যকারিতা ক্ষেত্রেও সাহায্য করে। যা গর্ভাবস্থা কালীন সময়ে বিশেষভাবে জরুরী।
কোষ্ঠকাঠিন্য হ্রাস করতে
গর্ভকালীন সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই জটিল একটি সমস্যা। এই সমস্যা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রত্যেক গর্ভকালীন মহিলাদের জন্য। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তরমুজ আপনাকে সাহায্য করতে পারে। কেননা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, মল গঠনের সহায়তা করতে তরমুজ খুবই জরুরী কেননা তরমুজ এর মধ্যে রয়েছে ফাইবার। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকাই অন্ত্রের প্রয়োজনীয় চলাচল করতে সাহায্য করে এবং কষ্ট কাঠিন্য রোধে সহায়তা করে।
ত্বকের রঞ্জকতা রোধে
গর্ভাবস্থা কালীন সময়ে ত্বকের রঞ্জকথা যা মেলাজমা নামেও পরিচিত একটা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে তরমুজ আপনাকে কিছু উপকারিতা দিতে পারে। তরমুজে একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যার নাম হচ্ছে লাইকোপেন যা ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নতিতে এবং রঞ্জকথা কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও যেহেতু তরমুজে বেশিরভাগ পরিমাণে পানি রয়েছে সেহেতু ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে এবং ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে তরমুজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যার ফলে ত্বক এর উজ্জ্বলতা বজায় থাকে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে।
ভ্রূণের হাড় গঠনে
গর্ভকালীন সময়ে মহিলাদের তরমুজ খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এর অন্যতম কারণ ভ্রুনের হাড় গঠনে সহায়তা করা। ভ্রুনের হাড় এবং দাঁত গঠনের সহায়তা করতে তরমুজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা তরমুজে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান। এই ভিটামিন সি হাড় গঠনের সাহায্য করে এবং কেনোজেন উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যা হারের মজবুতি ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়।
ভ্রূণের হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে তরমুজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, কেননা তরমুজের প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। তাহলে, আমরা জানতে পারলাম ভ্রূণের হার গঠনের ক্ষেত্রে ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম খুবই জরুরী। আর এই দুটি উপাদান তরমুজেও রয়েছে। তাই গর্ভকালীন সময় মহিলাদের তরমুজ খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
গর্ভাবস্থায় কালীন সময়ে তরমুজ খাওয়া খুবই নিরাপদ এবং অনেক স্বাস্থ্যকর উপকারিত রয়েছে। উপরে আমরা তরমুজের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি সেখান থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে তরমুজ বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে সুস্থ রাখে। তবে যে কোন খাবারের মতো তরমুজ খাওয়ারও কিছু অপকারিতা সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
নিচে কিছু বিষয়ে দেয়া হলো যার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোঃ
- এলার্জি বা অসহিষ্ণুতাঃ যেসব মহিলাদের এলার্জি রয়েছে সেসব মহিলা যদি তরমুজ খান তাহলে অ্যালার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি বিশেষ কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
- পরিমিত পরিমাণে খাওয়াঃ তরমুজ প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। আপনি যদি তরমুজ পরিমিত পরিমানে খান তবে এটি গর্ভবতী মহিলা ও তার শিশুর জন্য খুবই উপকারী হবে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পেট ফাঁপা ও ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- পরিষ্কার করাঃ প্রত্যেক ফল খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে খাওয়া উচিত। ঠিক সে রকম তরমুজ এর ক্ষেত্রেও। কেনোনা তরমুজের বাইরের অংশে লিস্টেরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে যা গর্ভবতী মহিলার জন্য ক্ষতিকারক।
তাহলে আমরা জানতে পারলাম তরমুজ খাওয়ার প্রচুর উপকারিতা ও বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখে। তবে সব ফলের মতন তরমুজেরও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে বিশেষ কোনো সমস্যা দেখা দিলে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। আর তরমুজ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে খাবেন এবং পরিমিত পরিমাণে খাবেন। তাহলে, তরমুজ গর্ভ কালীন মা ও শিশুর জন্য খুবই উপকার বয়ে আনবে।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা
গর্ভকালীন সময় মায়েদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময়টিতে আপনাকে আপনার ডায়েটের দিকে গভীরভাবে নজর রাখতে হবে। যে সকল খাবার গর্ভাবস্থা কালীন সময়ে শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে সেসব সবজি ও খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। নিচে কিছু সবজি ও খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিতঃ
করলাঃ গর্হবস্থা কারের সময়ে শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন একটি সবজির নাম করলা। কেননা করলাতে কিছু ক্ষতিকর পদার্থ থাকে যা গর্ভকালীন মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরাতে থাকা এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। সেই উপাদানগুলো হলো ল্যাটেক্স এবং অ্যান্থ্রাকুইনোন।
পেঁপেঃ পেপেতে রয়েছে পেপিং এবং ল্যাটিক্স নামক উপাদান যা গর্ভকালীন মায়ের গর্ভপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। পেঁপে থেকে বিরত থাকতে হবে।
সজিনাঃ সজিনা থাকা আলফা সিটেস্টেরল নামক উপাদান। যা গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
আনারসঃ গর্ভজাত শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে একটি ফলের নাম হলো আনারস। কেননা আনারস রয়েছে ব্রোমেলেন যা শিশুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এই সকল সবজি ও ফল ছাড়াও আপনি অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় এবং চীনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সাথে সাথে প্রত্যেক সবজি ধুয়ে খেতে হবে। না ধুয়ে সবজি খাওয়া এবং ফল খাওয়া যাবে না। এবং অনেকদিন ধরে ফ্রিজে রাখা ফল ও সবজি একেবারেই খাওয়া যাবে না। আপনি যদি আরও বিস্তারিত জানতে চান তাহলে, কোন কোন সবজি বা ফল খাওয়া যাবে বা খাওয়া যাবে না এ বিষয়ে আপনাকে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো হবে। এবং তার দেওয়া দিকনির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
আমরা অনেকেই জানতে চাই গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে আসলে কি হয়। কোন উপকার আছে নাকি কোন ক্ষতি হয়। এই প্যারাতে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে প্যারাটি পড়ুন তাহলে আপনার প্রশ্নের উত্তর আপনি পেয়ে যাবেন। গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়া খুবই উপকার বাচ্চা ও তার মা উভয়ের জন্য। মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো দেওয়া হলঃ
আরো পড়ুনঃ পাট শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার উপকারিতাঃ
- পুষ্টি ঘাটতি পূরণঃ মুড়ি খেলে গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হবে। কেননা মুড়িতে রয়েছে মিনারেল এবং ভিটামিন বি যা পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্যঃ শিশুর হাড় গঠন ও গর্ভবতী মায়ের জন্য মুড়ি খুবই উপকারী। কেননা মুড়িতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও আয়রন যা হাড় গঠনের সাহায্য করে।
- শক্তি বৃদ্ধিঃ মুড়ি গর্ভবতী মাকে এনার্জি দেয়। কেনোনা, মুড়িতে রয়েছে ক্যালরি ও শর্করা জাতীয় উপাদান।
- বমি বমি ভাব কমায়ঃ মুড়ি খেলে গর্ভবতী মায়েরা যখন বমি বমি ভাব অনুভব করেন তখন সেটা কমে যায়।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার অপকারিতাঃ
সাধারণত মুড়ি খাওয়া খুবই উপকার এবং বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে মুক্ত রাখে গর্ভবতী মা ও তার শিশু উভয়কেই। সেহেতু গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে আপনার কোন ক্ষতি হবে না বরঞ্চ উপকারী হবে। তারপরেও প্রত্যেক খাবারের কিছু উপকারিতা রয়েছে। তেমনি মুড়ির মধ্যে কিছু রয়েছে যেমনঃ
- কিডনির পাথরঃ অতিরিক্ত পরিমাণ যদি আপনি মুড়ি খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার শরীরের কিডনিতে পাথর দেখা দিতে পারে। কেননা মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম।
- উচ্চ রক্তচাপঃ যে সব মানুষের উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে মুড়ি উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা বাড়াতে পারে। কেননা মুড়িতে লবণের পরিমাণ বেশি রয়েছে।
নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url