পাকা কদবেলের উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা
পাকা কদবেলের উপকারিতা ও গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত। পাকা কদবেল খেতে খুবই সুস্বাদু এবং এর ঘ্রাণও খুব সুন্দর। পাকা কদবেল যদি ফাটিয়ে অথবা একটি ছিদ্র করে তার ভিতরে কাঠি দিয়ে কদবেলের শ্বাস খাওয়া যায় তাহলে তা খুবই সুস্বাদু এবং মিষ্টি ও টকশাদের হয়।
পাকা কদবেলে প্রচুর পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে এবং এর প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। আপনি যদি কদবেলের উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন। তাই আসুন দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
পেইজ সুচিপত্রঃ পাকা কদবেলের উপকারিতা । গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা
কদবেলের পুষ্টিগুণ
পাকা কদবেলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে দূরে রাখতে খুবই কার্যকরী। পাকা কদবেলে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও ভিটামিন সি রয়েছে। এতে আরো রয়েছে চর্বি, ক্যালসিয়াম, শর্করা ও আয়রন ইত্যাদি। নিচে পাকা কদবেলের পুষ্টি গুণের তালিকা দেওয়া হলোঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেলে রয়েছেঃ
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
পানীয় অংশ | ৮৫.৬ গ্রাম |
খনিজ পদার্থ | ২.২ গ্রাম |
খাদ্য শক্তি | ৪৯ কিলোক্যালরি |
আমিষ | ৩.৫ গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৫.৯ মিলিগ্রাম |
চর্বি | ০.১ গ্রাম |
ভিটামিন সি | ১৩ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি | ০.৮০ মিলিগ্রাম গ্রাম |
নিয়াসিন | ১.২ মিলিগ্রাম |
রিবোফ্লাবিন | ১.২০ মিলিগ্রাম |
থায়ামিন | ০.১৩ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | ৫৫ মিলিগ্রাম |
আস | ৫ গ্রাম |
ফসফরাস | ৫০ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন ই | ০.৮০ মিলিগ্রাম |
পাকা কদবেলের উপকারিতা
কমবেল খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনই এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ এবং এর আরো অনেক উপকারিতা। কদবেলে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি যা সুস্বাস্থ্য গঠনের জন্য খুবই প্রয়োজন। খাবার রুচি বাড়ায়, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এমনকি মৌসুমী জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও পেটের সমস্যা নিরাময় সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগ ভালো করে। তাছাড়া আরো অনেক উপকারিতা কদবেলের রয়েছে। বিশেষত গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী।এখন আমরা কদবেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব যদি আপনি কদবেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে এই আর্টিকেলটি খুবই মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।
ক্যান্সার প্রতিরোধে
ক্যান্সার বর্তমান সময় খুবই ভয়াবহ এবং প্রাণঘাতী রোগ। ক্যান্সার আমাদের কারোরই হোক তা আমরা কেউই চাই না। এর থেকে বাঁচতে গেলে কদবেল বিশেষ ভূমিকা রাখে। কদবেলের নির্জাসে থাকা ফাইটোকেমিক্যাল গুলো যেমনঃ ইউজেনল, সিনেওল, সিট্রাল, লুপেওল, ডি-লিমনিন এগুলো ক্যান্সার প্রতিরোধের ঔষধের মত কাজ করে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় জাফরান খাওয়ার নিয়ম । জাফরান খাওয়ার উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বিস্তার বন্ধ করতে এটি খুবই কার্যকরী। তাই ক্যান্সার নামক প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে কদবেল খাওয়া খুবই জরুরী। তবে ক্যান্সার প্রতিরোধের সাধারণত স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, নিয়মিত ব্যায়াম, ধুমপান ত্যাগ, সুষম খাদ্যাভাস বিশেষ ভূমিকা রাখে। আর ক্যান্সার প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে চিকিৎসকের পরামর্শ যা নেওয়ার সবারই খুবই জরুরী।
রক্তস্বল্পতা দূর করতে
রক্তস্বল্পতার আরেক নাম অ্যানিমিয়া। রক্তস্বল্পতা আমরা তখনই বলি যখন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম হয় প্রয়োজনের তুলনায়। এর ফলে আমাদের অনেকেরই মাথা ব্যথা, বমি ভাব, শরীর দুর্বল অনুভব করা বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এই রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া থেকে বাঁচতে হলে কদবেলের কোন বিকল্প নেই। রক্তস্বল্পতা হওয়ার মূল কারণ শরীরে আয়রনের অভাব।
তাই আপনি যদি আয়রন সমৃদ্ধ কোন খাবার খান তাহলে তা আপনার রক্তস্বল্পতা দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। ঠিক তেমনি কদবেল এই সমস্যা দূর করতে পারে। কেননা কদবেল রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আপনি যদি রক্তস্বল্পতা নামক রোগ থেকে বেঁচে থাকতে চান তাহলে কদবেলকে আপনাকে খেতে হবে।
আপনি কিভাবে কদবেল খেলে রক্তস্বল্পতা থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন, শরীরের শক্তি আবার ফিরে পাবেন তার কিছু ব্যবহার নিচে দেওয়া হলঃ
কদবেলের ব্যবহারের নিম্নরুপঃ
- কদবেল শরবতঃ প্রথমে আপনাকে কাঁচা কদবেল শরবত বানিয়ে খেতে হবে তাহলে তা আপনার শরীর শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
- পাকা কদবেলের চাটনি, আচার, ভর্তা, জেলি এগুলো যদি আপনি তৈরি করে খান তবুও সেটি আপনার শরীরের শক্তি রক্তস্বল্পতা দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
- কদবেল মিশ্রণঃ আপনি যদি কদবেলকে গুড় বা মিশ্রির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে খান তাহলে তা শরীরের শক্তি, রক্তশূন্যতা দূর করনে কার্যকরী।
পেটের রোগ নিরাময়
আমাদের মধ্যে অনেকেই পেটের রোগে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে আছি। পেট জনিত বিভিন্ন রোগ রয়েছে, তার মধ্যে আলসার খুবই জটিল রোগ। আমরা যদি পেটের ব্যথা থেকে বেঁচে থাকতে চাই তাহলে কদবেল বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। কেননা কদবেল রয়েছে শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট যা আলসার নিরাময় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কদবেলে বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যে উপাদান গুলো মূলত উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদান গুলি এমনকি পায়েলস এবং আলসারের চিকিৎসায় সহায়ক হতে পারে।
শ্বাস যন্ত্রের রোগ নিরাময়
আমাদের মধ্যে যাদের ফুসফুস জনিত কোন সমস্যা রয়েছে তারা কদবেল খেতে পারেন। কেননা কদবেল তার ঔষধি গুনাগুনের জন্য খুবই প্রসিদ্ধ। বিশেষত শ্বাসযন্ত্রের রোগ যেমনঃ ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা এবং অন্যান্য শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। কদবেলের মধ্যে রয়েছেঃ এন্টি ইনফ্লামেটরি, এন্টিভাইরাল এবং এন্টি মাইক্রোবায়ন এইসব উপাদান গুলি শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ ও সংক্রমণ হ্রাস করতে ভূমিকা পালন করে, সাহায্য করে ও শ্বাসযন্ত্রের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
আমাদের মধ্যে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের এই সমস্যার সমাধানের জন্য কদবেল বা বেলের শরবত খুবই উপকারী। কেননা বেলের মধ্যে থাকা পেটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান পরিপাক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং মল নরম করতে সাহায্য করে।
এটি অন্ত্রের মধ্যে পানি শোষণ করে এবং মলকে নরম করে তোলে। যা কষ্টকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা দূর করতে চান তাহলে নিচে দেওয়া পদ্ধতি অনুযায়ী কদবেল শরবত বানিয়ে খেলে তা থেকে মুক্তি পেতে পারেনঃ
প্রতিদিন যদি আপনি ৩০ থেকে ৩৫ গ্রাম পাকা বেলের শাঁস বের করে প্রতিবার এক গ্লাস পানিতে শরবত তৈরি করে খান দিনে দুইবার। তাহলে তা আপনার উপকার করবে। এইভাবে যদি আপনি কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ দিন বেলের শরবত পান করেন কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন আশা করা যায়। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘমেয়াদি হলে এটি একটি প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে কোন চিকিৎসার পরিবর্তে নয়।
আলসার নিরাময়
আলসার নিরাময়ে কিভাবে কদবেল ভূমিকা রাখে তা আমরা চলুন জেনে আসি। কদবেল পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমনঃ ডায়রিয়া এবং ডিসেন্ট্রি এর চিকিৎসায়ী উপকারী। কেননা কদবেলের মধ্যে থাকা ট্যানিন এবং অন্যান্য উপাদান পেটের মিউকাস মেমব্রেনকে শক্তিশালী করে এবং এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। যা আলসার নিরাময়ের সহায়ক হতে পারে।
আপনার পেটে যদি আলসার হয় তাহলে আপনি একজন চিকিৎসার পরামর্শ নিবেন এবং সেই অনুযায়ী খাদ্যাভাস গড়ে তুলবেন। বেলের শরবত আপনার আলসার নিরাময় ভূমিকা রাখতে পারে তবে এটি চিকিৎসার পরিবর্তে নয়। প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন তার পাশাপাশি সঠিক চিকিৎসা এবং সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
আমরা সকলেই জানি আমাদের শরীরে থাকা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের শরীরকে সুরক্ষিত রাখে। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি দিনে দিনে কমে যায় তাহলে তা বিভিন্ন রোগ আক্রমণে সুবিধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই আমাদেরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কদবেল এমন একটি ফল যা খেলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
কেননা বেলের ফলে রয়েছে ভিটামিন সি এবং এন্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এবং সংক্রমক থেকে রক্ষা করতে ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও বেলের ফলে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং ডিটক্সিফিকেশন এর সাহায্য করে। যার ফলে শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুনঃ কাঁকরোল এর উপকারিতা ও অপকারিতা
তবে আপনি যদি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান তবে শুধুই কদবেল খাওয়ায় যথেষ্ট হবে না। আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ কমানো এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারেন।
মুখের ব্রণ দূর করণে
আমাদের মধ্যে আম অনেকেই মুখের ব্রণ জনিত সমস্যা নিয়ে অনেক প্রকার দুশ্চিন্তায় আছি। অনেক চিন্তায় আছি কিভাবে তা ত্বক থেকে দূর করা যায়। সে ক্ষেত্রে আপনি কদবেল ব্যবহার করতে পারেন মুখের ব্রণ দূর করতে কদবেল খুবই সাহায্য করে। কদবেলের পাতা এবং কদবেলের ভিতর অংশ উভয়ই ত্বকের জন্য খুবই উপকারী মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন এবং এগুলি প্রদাহ বিরোধী যা ব্রন প্রতিরোধ এবং নিরাময় সাহায্য করে।
আপনি যদি বেলের পাতার পেস্ট বা ফলের মাংসের রস মুখে লাগান তাহলে তা ত্বকের তৈলাক্ততা কমায় এবং ব্রুনের জীবাণু ধ্বংস করে। তবে সতর্কতা হিসেবে আপনি বেলের ফল ও পাতার ব্যবহারের আগে ত্বকের প্রকার ও সংবেদনশীলতা যাচাই করে নিন। কেননা একেকজনের ত্বক একেক রকম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। তাই যে কোন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের আগে একটি ছোট পরীক্ষা করে নেওয়াই উত্তম।
হাড় মজবুত করতে
হাড় মজবুত করা আমাদের জন্য খুবই দরকারি একটি বিষয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে কদবেল খুবই সাহায্য করতে পারে। কেননা কদবেলে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফাইবার এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস এসব উপাদান গুলি যা সাধারণত স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
কদবেলের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম এই উপাদানটি হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে শুধুই কদবেল খাওয়ায় হাড় মজবুত করার জন্য যথেষ্ট নয়। আপনি যদি হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং ধূমপান এবং অতিরিক্ত কফি পান এড়িয়ে চলতে হবে। এমনকি আপনি বিভিন্ন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য।
কদবেলের অপকারিতা
কদবেল সাধারণত একটি পুষ্টিকর ফল যাতে প্রচুর গুনাগুন রয়েছে। কদবেল বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ যেমনঃ হাড় মজবুত করতে, শ্বাস যন্ত্রের রোগ নিরাময়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, আলসার নিরাময়, ক্যান্সার প্রতিরোধে এরকম অনেক রোগ নিরাময়ে কদবেলের ভূমিকা অপরিসীম, আমরা যদি আমাদের শরীর সুস্থ ও ভালো রাখতে চাই তাহলে কদবেলের কোন বিকল্প নেই।
তবে প্রত্যেক ফল খাওয়ারই কিছু অপকারিতা রয়েছে। তেমনি কদবেলেও কিছু অপকারিতা রয়েছে। কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয় তেমনি কদবেল যদি আপনি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন তাহলে তা আপনার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত কদবেল খাওয়ার ফলে আপনার হজম জনিত সমস্যা হতে পারে এবং পেট খারাপ হতে পারে।
আপনি যদি মুখে ব্রণ দূর করতে কদবেল পাতার রস ব্যবহার করতে চান তাহলে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা বিভিন্ন ত্বকে এলার্জিজনিত সমস্যা থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে কদবেলের রস এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। আপনাকে সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাছাড়া কদবেল সাধারণত প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর তা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত থাকতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে তারা চায় এই অবস্থায় যাতে উপকার জনিত খাবার খেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে বলব কদবেল এ অবস্থার ক্ষেত্রে খুবই উপকারী সাব্যস্ত হতে পারে আপনার কাছে। কদবেলে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, আমিষ, এন্টি অক্সিডেন্ট, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ এবং খনিজ পদার্থ যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
বিশেষ করে গর্ভকালীন দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন মহিলাদের মুখের রুচি কমে যায় ভালোভাবে খেতে পারেন না কদবেল সেটি বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং এই অবস্থার দুর্বলতা কাটাতে আপনি কদবেল খেতে পারেন। এছাড়াও আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধিতে, কষ্টকাঠিন্য রোগ থেকে রক্ষা করতে কদবেল খুবই জরুরী।
এমনকি গর্ভকালীন অবস্থায় তরলের ভারসাম্যহীনতা রক্ষা করতে কদবেল সাহায্য করে। তবে আপনি যদি গর্ভাবস্থায় খাবার যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কোনটি খাবেন আর কোনটি খাবেন না সেটা জানতে চান তাহলে আপনাকে একজন চিকিৎসক বা পুষ্টি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কেননা এ সময় খুবই সেনসিটিভ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
কদবেল খেলে কি ওজন বাড়ে
অনেকেই জানতে চান কদবেল খেলে কি আসলেই ওজন বাড়ে কিনা। আমরা আজকে এই প্যারাতে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। তাই খুবই মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ প্যারাটি পড়ুন। কদবেল একটি কম ক্যালরিযুক্ত ফল এবং এতে উচ্চ পরিমাণে আশ বা ফাইবার রয়েছে। সাধারণত কদবেল খুবই পুষ্টি গুনেভরপুর। এটি খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কম কারণ এটিতে ক্যালোর পরিমাণ কম থাকে।
এবং পুষ্টির মান উচ্চ পরিমাণে থাকে। তবে আপনি যদি কদবেল খান তাহলে এটি আপনার পেট ভরা অনুভব করাবে যাতে আপনার আরো খেতে উৎসাহিত করবে না। আপনার মনে হবে আপনার পেট ভরে আছে সে ক্ষেত্রে আপনি কম খাবেন এর ফলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ সহায়তা করে থাকে। এমনকি কদবেল হজম করতেও সাহায্য করে থাকে।
এছাড়া কদবেলের পাতার রস শ্বাসযন্ত্রের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে। সুতরাং আপনি জানতে পারলেন কদবেল খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। যদি আপনি তারপরও জানতে চান ওজন বাড়ানো বা কমানো বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া উচিত তারা আপনাকে আপনার শারীরিক অবস্থা ও পুষ্টির চাহিদা অনুযায়ী একটি খাদ্যাভ্যাস ও খাবার তালিকা দিবেন।
যা মেনে চললে আপনার ওজন কমানো বাড়ানো সম্ভব হবে। সেহেতু আপনি যদি কদবেল খান তাহলে তা আপনার ওজন বাড়াবে না উল্টো কমাতে সাহায্য করবে। তাই আমাদের বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে বেঁচে থাকতে এবং ওজন কমাতে কদ বেল খাওয়া খুবই উপকারী।
কদবেল গাছের ছবি
- গাছের আকারঃ কদবেল গাছ সাধারণত খুব বেশি বড় হয় এবং প্রায়ই ৯ মিটার অর্থাৎ ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে কদবেল গাছ।
- পাতাঃ গাছের পাতাগুলি পক্ষল এবং প্রতিটি পাতা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয় এবং চওড়াতে ১০ থেকে ২০ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়। যদি আপনি কদবেল গাছের পাতা পিষেন তাহলে তা থেকে আপনি লেবুর মত গন্ধ পাবেন।
- ফুলঃ কদবেল গাছে আপনি সাদা রংয়ের ফুল ফুটা দেখতে পারবেন এবং প্রতিটি ফুলে দেখবেন পাঁচটি পাপড়ি করে আছে।
কদবেলের ছবি
- কদবেল ফলঃ কদবেল ফল সাধারণত ৫ থেকে ৯ সেন্টিমিটার ব্যাসের হয় এবং এটি টক ও মিষ্টি স্বাদের হয়। ফলের বাইরের অংশ খুবই শক্ত এবং সবুজ বাদামী রঙের হয়। কদবেলের ভিতরের শ্বাসের অংশটি আঠালো এবং বাদামি রঙের দেখতে হয়। এবং এর ভিতর ছোট ছোট সাদা বীজ দেখতে পাওয়া যায়।
নবান্ন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url